[ ম্যাক নিউজ ডেক্স ]
হলমার্কের জিএম তুষার আহমদ এক নারীর সঙ্গে কারাগারের ভেতরেই সময় কাটিয়েছেন
বিধি লঙ্ঘন করে গাজীপুরে অবস্থিত কাশিমপুর কারাগারে বন্দী হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ এক নারীর সঙ্গে কারাগারের ভেতরেই সময় কাটিয়েছেন। কারাগারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এ ঘটনায় কারাগারের দুই কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
কারাগারের গত ৬ জানুয়ারির রক্ষিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কারা কর্মকর্তাদের অফিসের সামনে কালো রঙের জামা পরে পাঁয়চারি করছেন বন্দী তুষার আহমেদ। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর বাইরে থেকে বেগুনি রঙের জামা পরা এক নারী সেখানে উপস্থিত হন। কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলায়েন সেসময় সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই ঘটে এমন ঘটনা।
এরপর দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারীকে কারা কর্মকর্তাদের কক্ষের দিকে যেতে দেখা যায়। সেখানে যাওয়ার পর ওই নারীকে স্বাগত জানান সাকলায়েন নিজেই।
ফুটেজে আরও দেখা যায়, ওই নারী কক্ষে ঢোকেন ও সাকলায়েন বেরিয়ে যান। এর আনুমানিক ১০ মিনিট পর তুষারকে সেখানে নিয়ে যান সাকলায়েন। এর প্রায় ১০ মিনিট পর রত্না তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। দুই মিনিট পর রত্নার কক্ষের দিকে যান তুষার। এরও দুই মিনিট পর সেখান থেকে বেরিয়ে ওই নারীকে নিয়ে আবার রত্নার কক্ষে যান তুষার।
যাওয়ার সময় তাদের হাসি-তামাশা করতে দেখা যায়। এর দুই মিনিট পর তুষার ও ওই নারী আবারও সাকলায়েনের কক্ষে আসেন। এবার আর কোথাও যাওয়া নয়। এ কক্ষেই তারা অবস্থান করেন প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা। এরপর তাদের বের হয়ে যেতে দেখা যায়।
এদিকে এ ঘটনার তদন্তে ১২ জানুয়ারি তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবুল কালামকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী।
২১ জানুয়ারি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষও। কারা কর্তৃপক্ষের গঠন করা কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেনকে। অন্য দুই সদস্য হলেন উপসচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি প্রিজন (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবির।
প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটির প্রধান এডিএম আবুল কালাম। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য তাদের সাত কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। দু–এক দিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন।
কর্তৃপক্ষের গঠন করা কমিটির প্রধান আবরার হোসেন জানান, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য তাদেরও সাত কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। দোষীরা সবাই যথোপযুক্ত শাস্তি পাবেন।
তবে, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দীর সঙ্গে একান্তে স্ত্রীর সময় কাটানোর অভিযোগে সহায়তার দায়ে ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ সাকলাইন, সার্জেন্ট আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী খলিলুর রহমানকে প্রত্যাহার করে কারা সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট যে কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকেও প্রয়োজনে অতি দ্রুতই প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কারা মহা পরিদর্শক।