[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামীকাল (বুধবার) থেকে এক সপ্তাহের জন্য মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপিত থাকবে। এতে সব সরকারি-বেসরকারি অফিসের সাথে বন্ধ থাকবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। ব্যাংক শাখার পাশাপাশি আর্থিক সেবা দেওয়া ব্যাংকের সব উপ-শাখা, বুথ ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ থাকবে।
সাতদিন সারা দেশের সব ব্যাংক বন্ধ রাখার এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে এই প্রথম। ফলে এ বিষয়টি মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য রয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক বন্ধ থাকা অবস্থায় টাকা তোলার প্রয়োজন হলে তার সমাধান কী হবে, সে বিষয়টিই বেশি ভাবাচ্ছে মানুষকে।
এর একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, সব ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও কিছু ব্যাংকের কয়েকটি বিশেষ শাখা খোলা রাখা যাবে।
এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন করা যাবে। গ্রাহক যাতে এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারেন তার ব্যবস্থা রাখতেও ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে, এটিএম বুথগুলোতে নগদ অর্থের যাতে অভাব না হয় সেজন্য ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থাৎ ব্যাংক বন্ধ থাকলেও জরুরি প্রয়োজনে এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সুযোগ থাকছে।
এটিএম-এ টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা হবে এক লাখ টাকা। এছাড়া, অন-আস ও অফ-আস উভয়ক্ষেত্রে টাকা উত্তোলনের একক লেনদেনের ন্যূনতম পরিমাণ একই হবে।
এসবের সঙ্গে অনলাইন ব্যাংকিংও চালু রাখার কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকার ব্যাংকের শাখা ও বুথগুলো খোলা থাকবে। কারণ, বন্দর কাস্টমসে পণ্য আমদানি-রফতানিতে প্রয়োজন হতে পারে; তাই সেখানকার সংশ্লিষ্ট শাখাগুলো খোলা থাকবে।
অনুমোদিত এলাকায় অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় অত্যাবশকীয় পণ্য/সেবার সঙ্গে পরিচালিত মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সেবা প্রদান ও নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করবে। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের দেওয়া নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করতে হবে। অর্থাৎ জরুরি প্রয়োজনে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহারের সুযোগও থাকছে।
আগামীকাল ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকগুলোকে এসব নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। ফলে গ্রাহকদেরও ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে এসব নির্দেশনার আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এদিকে সাত দিন ব্যাংক বন্ধের খবরে আজ (মঙ্গলবার) ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে। টাকা উত্তোলনের চাপে গ্রাহকদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, দিলকুশা দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকের উপচেপড়া ভিড়। ব্যাংকাররা বলছেন, সাত দিন বন্ধের খবরে আজকে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় গ্রাহকের অনেক চাপ। তবে টাকা জমা দেওয়ার চেয়ে উত্তোলন বেশি করছেন গ্রাহকরা।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সোমবার (১২ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। নতুন এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১৪ এপ্রিল থেকে ৭ দিন দেশের সব অফিস-আদালত, শপিংমল, দোকানপাট, হাটবাজার বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সব ধরনের পরিবহন চলাচল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তব পোশাক কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখা যাবে।