[ম্যাক নিউজ ডেক্স]


গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে জুতা ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন পুলিশ সুপার।

অপহরণের পর জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে উদ্ধার করে আবার অপহরণকারীর হাতে তুলে দেয় পুলিশ। এরপর ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর মঙ্গলবার রাতে গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবর রহমান ও এসআই মোশাররফকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার এবং একই সাথে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজার রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র দেয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চের সংগঠক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে পুলিশের দায়িত্বহীনতার প্রমাণ মেলে। তবে থানার ওসি মাহফুজার রহমান এ ঘটনার দায় কিছুতেই এড়াতে পারেন না। আমরা অবিলম্বে ওসি মাহফুজার রহমানকে থানা থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে দোষীদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চের সমন্বয়ক প্রবীণ রাজনীতিক আমিনুল ইসলাম গোলাপ ঢাকাটাইমসকে বলেন, অভিযোগ প্রমাণের পর প্রত্যাহার নয়, দোষী পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং ওসি মাহাফুজার রহমানকেও প্রত্যাহার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাকে থানায় স্বপদে বহাল রেখে এই মামলার সঠিক তদন্ত সম্ভব নয় বলেও জানান এই প্রবীণ রাজণীতিবিদ।

প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে (১০ মার্চ) সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের (খানকা শরিফ) এলাকার বাড়ি থেকে থেকে হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় অভিযুক্ত মাসুদ রানাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। মাসুদ রানা সদর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। গত ৫ মার্চ হাসান আলীকে অপহরণ করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আটক করে রাখেন মাসুদ রানা।

পরে গত ১৫ মার্চ পরিবারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ হাসান আলীকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু পুলিশ মাসুদ রানার পক্ষে প্রভাবিত হয়ে আবারও তার জিম্মায় হাসান আলীকে তুলে দেয়।

মৃত্যুর আগে মোবাইল থেকে ক্ষুদে বার্তায় হাসান আলী স্বজনদের জানান, মাসুদ রানা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে এবং থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে তার কাছ থেকে মিথ্যা অঙ্গীকার নেয় আর রুমেন হক খলিলুর রহমান বাবু তাকে সর্বশান্ত করেছে। ওই দিনই মাসুদকে আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে মাসুদ রানা, রুমেন হক খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে সদর থানার দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চারদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠায়, আর এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

অন্যদিকে ব্যবসায়ী হাসান আলীকে উদ্ধারের পর থানা থেকে অপহরণকারী মাসুদ রানার হাতে তুলে দেয়ার ঘটনায় পুলিশের সম্পৃক্ততা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাহাত গাওহারীকে আহবায়ক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু খায়ের ও পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতিফকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। ওই কমিটি তদন্ত শেষে মঙ্গলবার রাতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

সূত্র: ঢাকা টাইমস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *