[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে কুমিল্লা-৫ সংসদীয় আসন। এ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে আসন্ন উপনির্বাচনে কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন এ নিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ এপ্রিল ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মতিন খসরু।

বিধি অনুযায়ী গত ২২ এপ্রিল আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। তফসিল ঘোষণা না হলেও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এর মধ্যে মতিন খসরু পরিবারেই রয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তান, ভাইসহ চারজন। এর বাইরেও অন্তত দেড় ডজন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, অবসরপ্রাপ্ত আমলা ও ব্যবসায়ী মনোনয়ন পেতে লবিং-দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে কৌশলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার চালাচ্ছেন। তবে সবারই একই বক্তব্য- দলের সভাপতি যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন তারা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই আসন থেকে আব্দুল মতিন খসরু দলের মনোনয়নে মোট পাঁচ বার (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এ সংসদীয় আসনে দলীয় কোন্দলও কম ছিল না। এ কারণে ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে উভয় উপজেলা এবং গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হন। সেই কোন্দলের আঁচ সংসদীয় এ আসনের উপনির্বাচনেও পড়বে কিনা, তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ স্থানীয় নেতাদের মধ্যে। কারণ মনোনয়ন চেয়ে এখন পর্যন্ত ৭/৮ জন মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। নির্বাচন সামনে এলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন- প্রয়াত মতিন খসরুর স্ত্রী সালমা সোবহান খসরু, এবং ছোট ভাই জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মমিন ফেরদৌসের নাম। এর বাইরে আলোচনায় রয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান, কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বুড়িচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন স্বপন,কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহসম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এহতেশামুল হাসান ভূঁইয়া রুমি, সাবেক ছাত্রনেতা ও সোনার বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ, বুড়িচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার মো. নিজামুল ইসলাম।

সালমা সোবহান খসরু বলেন, ‘আমার স্বামীর মৃত্যুর এখনও দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়নি। আমরা শোকাহত। তার (মতিন খসরু) স্মৃতি ধরে রাখতে আমি নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব। আশা করি তিনি আমাদের হতাশ করবেন না।’

সাজ্জাদ হোসেন স্বপন বলেন, ‘কলেজ জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে খসরু ভাইয়ের পাশে ছিলাম। প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে খসরু ভাইকে বিজয়ী করেছি। তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব। তবে সবচেয়ে বড় কথা, নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেন তার পক্ষে কাজ করব।’

মেজর জেনারেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উপনির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। দল থেকে মনোনয়ন পেলে অবশ্যই নির্বাচন করব।’

এহতেশামুল হাসান ভূঁইয়া রুমি বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব, তবে নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন, আমরা তার পক্ষে কাজ করব।’
দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি সমকালকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অনেক বড় সংগঠন। এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকা অনেক বড় হতেই পারে। এসব সমস্যা না। তফসিল ঘোষণার পর দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *