[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

কচি ডাবের ভেতরকার রসই হল ডাবের পানি। ডাবের পানি যেকোনো কোমল পানীয় থেকে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ। প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান থাকার জন্য বাড়ন্ত শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্য ডাবের পানি যথেষ্ট উপকারী। কেবল গরমের সময়ই নয়, সারা বছরই পান করতে পারেন ডাবের পানি। কারণ ডাবের পানি শুধু পানীয় হিসেবেই উপকারী তা নয়, ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অনেক জটিল রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেই ডাবের পানির উপকারিতা-

(১). পানি শূন্যতা দূর করে: ডাবের পানি আমাদের শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে। ডায়ারিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামের পর শরীরের খনিজের ঘাটতি মেটাতে ডাবের পানি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

(২). রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: কোনো কারণে রক্তচাপ বেড়ে গেলে সেটা কমাতে সহায়তা করে ডাবের পানি৷ ডাবের পানিতে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

(৩). রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ডাবের পানির অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যকটেরিয়াল উপাদান বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের আক্রমণ থেকেও রক্ষা করতে সহায়তা করে। তাছাড়া এতে থাকা রিবোফ্লেবিন, নিয়াসিন, থায়ামিন এবং পেরিডক্সিন উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করে।

(৪). ওজন কমায়: ডাবের পানিতে কোন ফ্যাট বা চর্বি নেই। যেকোনো চিনিযুক্ত ফলের জুসের চাইতে অনেক বেশি কার্যকরী এই ডাবের পানি। তাই যারা ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগ্রহী তাদের জন্য ডাবের পানি বেশ উপকারী৷

(৫). ত্বকের সুরক্ষা করে: এতে পানির পরিমাণ প্রায় ৯৪ শতাংশ। ডাবের পানি দেহের শিরা-উপশিরায় সঠিকভাবে রক্ত চলতে সাহায্য করে। তাই ডাবের পানি ত্বকের জন্য বিশেষভাবে কার্যকরী। ত্বকের নানা সমস্যা যেমন ভ্রন, মেছতা, ছোপ ছোপ দাগ, উজ্জ্বলতা হারানো, ত্বকের ইনফেকশন এইসব সমস্যা দূর করে নিয়মিত ডাবের পানি পান করার অভ্যাস।

(৬). মাথা ব্যথা দূর করে: ডিহাইড্রেশনের কারণে মাথা ব্যাথা বা মাইগ্রেনের অ্যাটাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে এক গ্লাস ডাবের পানি পান করে নিন। কমে যাবে মাথা ব্যথা।

(৭). হাড় শক্ত করে: উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম রয়েছে ডাবের পানিতে, যা হাড়কে করে মজবুত। সেই সঙ্গে জোগায় ত্বক, চুল, নখ ও দাঁতের পুষ্টি।

(৮). ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে: গবেষণায় দেখা গেছে যে ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাছাড়া এতে কোনো চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই।

(৯) যৌবন ধরে রাখে: ডাবের পানিতে থাকা অ্যান্টি-এজিং উপাদান শরীরের কোষকে সহজে বুড়িয়ে যেতে দেয় না। একই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে ডাবের পানি। তাই নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে সহজে বয়সের ছাপ পড়বে না শরীরে।

তাছাড়া বদহজম দূর করে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ডাবের পানি। ব্যায়ামের পর যখন শরীর ঘেমে ক্লান্ত হয়ে যায় তখন ডাবের পানি পান করলে শরীরের ফ্লুইডের ভারসাম্য বজায় থাকে। ডাবের পানি বাচ্চাদের গ্রোথ বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরে ব্লাড সার্কুলেশন ভাল রাখে।

সতর্কতা: কিডনিতে পাথর হয়েছে বা ডায়ালাইসিস চলছে, এ ধরনের রোগীরা ডাবের পানি খাবেন না। কারণ এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম, যা কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *