[ম্যাক নিউজঃ- স্টাফ রিপোর্ট]

কুমিল্লার দেবিদ্বারের বহুল আলোচিত শারমিন আক্তার (২৫) নামের সেই প্রসূতির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য একমাস পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ (১২ মে) সকালে জেলার মুরাদনগরের মুগসাইর গ্রামের স্বামীর বাড়ির কবর থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মো. সাইফুল ইসলাম কমলের উপস্থিতিতে পুলিশ মরদেহ উত্তোলন করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানার এস.আই মো.ইকতার মিয়া। গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।

দেবিদ্বার থানার এসআই ইকতার হোসেন জানান, ওই গৃহবধূর মৃত্যুর পর তার পরিবার থানায় অভিযোগ দাখিল করে মরদেহ থানায় হস্তান্তর না করেই তড়িঘড়ি তার স্বামীর বাড়িতে মরদেহ দাফন করে ফেলে। তাই মামলার তদন্তের স্বার্থে পরে আদালত মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দিলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টয় মরদেহ উত্তোলন করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মরদেহ উত্তোলনের সময় মামলার বাদী ও শারমিনের বাবা মোবারক হোসেন ও স্বামী রাসেল মিয়া উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও জানান, মামলার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই ওই প্রসূতির মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

এর আগে গত বছরের ৫ নভেম্বর মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামের রাসেল মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে দেবিদ্বার আল ইসলাম হসপিটালে সিজিরিয়ান অপারেশন করেন ওই হাসপাতালের খন্ডকালীন চিকিৎসক ডা. রোজিনা আক্তার ও তার সহযোগি ডা. শামীমা আক্তার লিন্টাসহ অন্যান্যরা। জন্ম হয় ছেলে সন্তান। গত ৯ নভেম্বর তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়। শারমিনের বড় ভাই রহুল আমিন জানান, ওই প্রাইভেট হাসপাতালে তার বোনকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর ব্যথা আরও বেড়ে গেলে তাকে কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রচুর ওষুধ খেতে দেন। কোথাও আসল রোগ নির্নয় হয়নি। কিন্তু তার জীবন সংকটাপন্ন দেখে গত ৬ এপ্রিল জেলার ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালে তার অপারেশন করে পেট থেকে গজ বের করা হয়। কিন্তু সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় গত ১০ এপ্রিল ভোরে তাকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়ার পর গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

পরদিন অপারেশনকারী সার্জন ও দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রোজিনা আক্তার, ওই প্রাইভেট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা আক্তার লিন্টা, এনেসথেসিয়া ডা. মেহেদুল হাসান পারভেজ, হাসপাতালের চেয়ারম্যান নজির আহমেদ ও গ্রাম্য চিকিৎসক সফিকুর রহমানকে অভিযুক্ত করে প্রসূতির বাবা দেবিদ্বার উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক মোবারক হোসেন বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *