[ম্যাক নিউজ রিপোর্টঃ-নেকবর হোসেন
কুমিল্লা প্রতিনিধি]
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প যাচ্ছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। সব ধাপ পেরিয়ে এ প্রকল্প এখন একনেকে পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রি-একনেকের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়া এ প্রকল্পটি মাসখানেকের মধ্যে একনেকে উঠতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ২০২৪ সালের শেষ দিকে কুমিল্লা নগরীর চেহারায় আমূল পরিবর্তন আসবে। নগরবাসীর জীবন মানের ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাগরিক সুযোগ-সুবিধাও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১১ সালের ১০ জুলাই কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এত বড় প্রকল্প আর বাস্তবায়ন হয়নি। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কুমিল্লাবাসীর দীর্ঘদিনের নানা নাগরিক দাবির মধ্যে বেশ কয়েকটি বাস্তবায়ন হবে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, একটি আধুনিক নগর ভবন তৈরি, সিটি করপোরেশনের সেবকদের জন্য কলোনি নির্মাণ, অবহেলিত ও প্রায় নিমজ্জিত হয়ে পড়া কুমিল্লা পুরনো গোমতী নদীকে পুনরুদ্ধার করে লেকে রূপান্তর করে দৃষ্টিনন্দন রূপ দেওয়া,
নগরীর তিনটি বাস টার্মিনালকে আধুনিকায়ন করা, রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ফুটপাত সংস্কার ও নির্মাণ, ডিসি পুকুরকে নান্দনিক করে বিনোদনের ক্ষেত্র হিসেবে রূপ দেওয়াসহ বেশ কয়েকটি কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ওই মেগা প্রকল্পে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রকল্পটি দুই বছর ধরে নানা পথ অতিক্রম করে এখন একনেকে ওঠার পর্যায়ে রয়েছে।
জানা গেছে, প্রকল্পের মধ্যে অন্যতমগুলো হলো- কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নতুন ভবন নির্মাণ। দুইতলা বেজমেন্টসহ ১৫ তলা ভিত্তির ওপর নয়তলা আধুনিক ভবন নির্মাণ, এ নগর ভবনে থাকবে মার্কেট বা বিপণিবিতান, ব্যাংক-বীমা, বিভিন্ন অফিস। কঠিন যানজট নিরসনে নগরীর শাসনগাছা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালকে শহরের বাইরে স্থানান্তর। মোস্তফাপুরে ১০ একর ভূমির ওপর আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, পুরনো ]গোমতী নদীকে সংস্কার করে নান্দনিক চারটি সেতু নির্মাণসহ এটিকে প্রকৃত বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে নির্মাণ করা। পুরনো গোমতী নদীর চারটি সেতু হবে হারুন স্কুলের পাশে একটি, থানা রোডে একটি, শুভপুরে একটি ও কাপ্তানবাজারে একটি। নগরীর চকবাজার বাস টার্মিনালকে সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা, ছয়তলা করে দুটি সেবক ভবন নির্মাণ করা। কুমিল্লা ডিসি পুকুরকে দৃষ্টিনন্দন রূপ দিয়ে আধুনিকায়ন ও বিনোদনের ক্ষেত্রে রূপান্তর করা, এর মধ্যে একটি দৃষ্টিনন্দন কমিউনিটি সেন্টার বা কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ। সেই সঙ্গে রয়েছে কবরস্থান ও শ্মশানের উন্নয়ন। এ ছাড়া কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সীমানা বর্ধিতকরণের একটি পৃথক প্রকল্পও জমা রয়েছে দুই বছর ধরে। এ প্রকল্পটিও সহসাই পাস হতে পারে বলে জানা গেছে।
কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু জানান, এ প্রকল্পটি পাস হলে কুমিল্লাবাসীর অনেক দাবি বাস্তবায়ন হবে। এটি কুমিল্লার চেহারাকে পাল্টে দেবে। তিনি বলেন, আমাদের মেয়াদ রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। এ প্রকল্প পাস হবে এটা ঠিক। জুনের মধ্যে প্রকল্পটি পাস হলে দ্রুত কাজে হাত দেওয়া যাবে। আগামী ২৪ সালের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যেত। আর যদি এক মাস দেরি হয়, তা হলে কাজ শেষ হতেও দেরি হবে। মন্ত্রী-এমপিও এ ব্যাপারে সদয় আছেন।