[ম্যাক নিউজ রিপোর্টঃ-মারুফ আহমেদ,কুমিল্লা।]

কুমিল্লার প্রধাননদী গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ভিতর অবৈধ ভাবে বহুতল ভবন নির্মান করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বানিজ্যিকভাবে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। সরকার সারাদেশে নদী দখল মুক্ত করতে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করলেও কুমিল্লার বিভিন্নস্থানে গড়েউঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ভূমিকা নেই পানি উন্নয়ন বোর্ড বা জেলা প্রশাসনের । ফলে দিন দিন নদী দখল বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। সম্প্রতি জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে সারাদেশে নদী দখলে কুমিল্লার অবস্থান শীর্ষে। সেখানে জেলায় নদী দখল করে গড়েউঠা স্থাপনার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৫হাজার ৯০৬টি। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুমুর নামক স্থানে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার কটক বাজার সীমান্ত হয়ে এদেশে প্রবেশ করেছে নদীটি।

এরপর সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মনপাড়া, দেবীদ্বার, মুরাদনগর, তিতাসহয়ে দাউদকান্দির সাপটায় গোমতী মেঘনার সাথে মিলিত হয়েছে। প্রায় ১’শ ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য নদীটির প্রশস্থতা স্থান ভেদে ১২২ মিটার। নদীটির প্রতিরক্ষা বাঁধের ভিতর দীর্ঘ দিন ধরে দখল প্রক্রিয়া চলে আসছে। কোথাও কাঁচা, কোথাও আধাপাকা আবার কোথায় বহুলভবন নির্মান হয়েছে। এয়াড়াও নদীর বুকে বেশ কিছুস্থানে বনায়ন করে দখল প্রক্রিয়া ধরে রেখেছেন কেউ কেউ। মোট কথা নদীর দু’পাড়ে চলছে বেপরোয়া দখল বানিজ্য। আর এই দখলকৃত জায়গায় গড়ে উঠছে বিভিন্ন শ্রেনীর স্থাপনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নদীতীরের একাধিক লোক জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড এর লোকজন আসলে তাদের ম্যানেজ করলে সবকিছুু ঠিক হয়ে যায়। কোন ঝামেলা হয়না। এদিকে নদী তীরের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গোবিন্দপুর, কংশনগর, ব্রাহ্মনপাড়ার মালাপাড়া, মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ এলাকার বিভিন্নস্থানে দখলদারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, এগুলো আমাদের নিজস্ব সম্পত্তি। পৈত্রিক সুত্রে আমরা এসব জায়গার মালিক। অথচ জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল এশটিসুত্র নিশ্চিত করেছে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ভিতর কোন ব্যক্তি মালিকাধীন জায়গা বা ভূমি নেই। এঅবস্থায় কিভাবে নদীর তীর ঘেষে বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করে বানিজ্যিক ভাবে চালু রেখেছে সেটা বোধগম্য হচ্ছেনা। গোমতী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জাকির বলেন, গোমতী নদীকে রক্ষা করতে হলে মাটি ও বালু উত্তোলন শতভাগ বন্ধ করতে হবে, অবৈধ ভাবে দখলদারদের হাত থেকে নদীর দুই পাড়ের ফসলী জমী উদ্ধার করে কৃষকদের মাঝে ফিরিয়ে দিতে হবে। অবৈধ দকলদ্বারদের উচ্ছেদ করতে হবে, গোমতী নদীকে বাচাঁতে গোমতী রক্ষা কমিটি যে কোন রকম কার্যক্রম গ্রহন করবে।
বিষয়টি জানতে চাইলে কুমিল্লা পরিবেশবাদী আন্দোলনের সভাপতি ডাঃ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নদীর রক্ষায় প্রতিরক্ষা বাঁধের ভিতর থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা জরুরী।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান জানান, নিয়ম না মেনে যারা এসব অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছে, আমরা তাদের তালিকা তৈরি করেছি, আমরা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান শুরু করেছিলাম, করোনা কালিন লকডাউনের কারনে আপাতত এ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে, করোনা শেষ হলে আবার এ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করব।
ক্যাপশনÑকুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কংশনগর গোমতি নদিার প্রতিরক্ষা বাঁধের ভিতর গড়ে উঠেছে বহুতল ভবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *