[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

ব্রিটেনে কোভিড-১৯য়ে গুরুতর আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছে, এমন হাজার হাজার মানুষকে হাসপাতালে যাবার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, তাদের ফুসফুস চিরকালের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য।

ব্রিটেনে চিকিৎসকরা বিবিসিকে বলেছেন যারা করোনাভাইরাসে গুরুতরভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তারা আশংকা করছেন, তাদের একটা বড় অংশের ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে, যাকে বলা হয় পালমোনারি ফাইব্রোসিস।

ফুসফুসের এই ক্ষতি থেকে সেরে ওঠা যায় না, এবং এর উপসর্গগুলো হল মারাত্মক শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং ক্লান্তিবোধ।

ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অধীনে সেরে ওঠা রোগীদের বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেয়ার ও পুর্নবাসনের জন্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

ইংল্যান্ডের একজন ট্যাক্সিচালক, কোভিডে আক্রান্ত হবার পর যার অবস্থার অবনতি হয় এবং ১৩দিন ভেন্টিলেটারে থাকাসহ প্রায় চার সপ্তাহ যাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়, তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর এরকম একটি পুর্নবাসন কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও দুই সপ্তাহ।

সেরে ওঠার ছয় সপ্তাহ পর এপ্রিলের মাঝামাঝি বাসায় ফিরে অ্যান্টনি ম্যাকহিউ এখনও সিঁড়ি ভাঙতে বা ছোটখাট সহজ কাজ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে পড়ছেন। নিচু হতে গিয়েও তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।

ফুসফুসে আস্তরণ
হাসপাতালে সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর তার দুটি ফুসফুসের ওপরই একটা সাদা কুয়াশার আস্তরণ তৈরি হয়েছে- অনেকটা ভাঙা কাঁচের মত দেখতে। চিকিৎসকরা বলছেন এটা করোনাভাইরাস আক্রমণের একটা বৈশিষ্ট্য।

করোনাভাইরাসে গুরুতরভাবে আক্রান্ত হলে শরীরের প্রতিরোধী ব্যবস্থা যখন অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন এর ফলে প্রচুর শ্লেষ্মা, জলীয় পদার্থ এবং কোষ তৈরি হয়, যা ফুসফুসে যে বাতাস চলাচলের থলিগুলো আছে যাকে অ্যালভিওলি বলা হয়, সেগুলোকে ভর্তি করে ফেলে। এটা যখন হয়, তখন নিউমোনিয়া দেখা দেয় এবং সাহায্য ছাড়া মানুষের পক্ষে নিঃশ্বাস নেয়া সম্ভব হয় না।

কোভিড আক্রান্ত হবার পর ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসের ছবি

আক্রান্ত হবার ছয় সপ্তাহ পর নেয়া মি. ম্যাকহিউয়ের এক্স-রে-তে দেখা গেছে তার ফুসফুসের ওপর একটা সাদা ছায়ার মত স্তর তৈরি হয়েছে যেটাকে ডাক্তাররা বলছেন পালমোনারি ফাইব্রোসিস বা ফুসফুসে ক্ষত সৃষ্টির প্রাথমিক লক্ষণ।

ব্রিটিশ সোসাইটি অফ থোরাসিক ইমেজিংএর একজন সদস্য এবং রয়াল কলেজ অফ রেডিওলজিস্টের উপদেষ্টা ড. স্যাম হেয়ার বলছেন, “সাধারণত এধরনের ভাইরাস সংক্রমণের পর ছয় সপ্তাহ হয়ে গেলে ফুসফুসের অবস্থা আবার আগের জায়গায় ফিরে যাবার কথা- অন্তত চিকিৎসকরা সেটাই আশা করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সেটা হয়নি এবং সেজন্যই এটা উদ্বেগের কারণ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *