দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বার ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষককে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল খোলার উপযুক্ত রাখতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে আঞ্চলিক পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে— সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে হবে। ওয়ার্কশিট বিতরণ শতভাগ নিশ্চিত ও যাচাই করতে হবে। শিখন ঘাটতির অবস্থা ও ফিডব্যাক নিতে হবে। বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও আছে- শিক্ষকদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। হোম ভিজিট যাচাই করতে হবে। শিক্ষার্থী প্রোফাইল শতভাগ হয়েছে কি না তা দেখতে হবে। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। স্যাম্পল হিসেবে শিক্ষার্থীর বাড়ি যাওয়া এবং শিক্ষার্থী যোগাযোগ রেজিস্ট্রার যাচাই করতে হবে।

এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক ঠিক করার জন্য দ্রুত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের আদেশ যথাযথ পালন করতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্র বলছে, শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেওয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও টিকার আওতায় এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীর টিকা নেওয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসা পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। সে কারণে স্কুলে ছুটি আরেক দফা বাড়ছে।

সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সহকারী উপজেলা ও থানা শিক্ষা অফিসারদের এক সপ্তাহের মধ্যে সব বিদ্যালয় পরিদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো কর্মকর্তারা যদি নির্দিষ্ট এলাকার সব বিদ্যালয় পরিদর্শন না করেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও কলেজ) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং বিদ্যালয় খোলার সার্বিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক পরিচালকদের নির্দেশ দিয়েছি। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি খোলা যাবে। তাছাড়া আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাই রয়েছে। নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া এবং তা নেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *