ম্যাক নিউজ রিপোর্ট :-রুবেল মজুমদার কুমিল্লা।।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ,জেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক , প্রখ্যাত ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ অধ্যক্ষ আফজল খান আর নেই। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২.৩০ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন । ইন্না ইলাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি স্ত্রী,তিন পুত্র ও এক কণ্যাসহ বহু আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে যান। প্রয়াত আফজাল খানের বড় মেয়ে ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা এমপি এ কথা নিশ্চিত করেছেন।
এমপি সীমা জানান, দীর্ঘদিন বাধক্য জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় কুমিল্লা সিডিপ্যাথ হাসাপাতাল থেকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি মারা যান। সদ্য প্রয়াত বাবার জন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া চেয়েছেন আঞ্জুম সুলতানা সীমা।
আফজলের খানের বড় ছেলে এফবিসিসিআই এর পরিচালক মাসুদ পারফেজ খান ইমরান জানান, আগামীকাল বুধবার পরিবার সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ১১.টায় ঠাকুরপাড়া খান বাড়ি জামে মসজি ও বাদ যোহর কান্দিরপাড় টাউন হল মাঠে জানাযা অনুষ্ঠিত হাওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, তিনি কুমিল্লা জেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রাক্তন যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৪৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আফজল খান কুমিল্লা নগরের ঠাকুরপাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মো. ছাদেক আলী খান ও মায়ের নাম সাজেদা খানম। ১৯৬৫ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রসংসদ থেকে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ভিপি (সহসভাপতি) নির্বাচিত হন। ’৬৬–এর ছয় দফা, ’৬৯–এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ও সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে আফজল খান কুমিল্লা পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি কুমিল্লা শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭৮ ও ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা পৌরসভা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। ১৯৮৬ সালে কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। এরপর তিনি ১৯৯০ সালে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। ১৯৯৫ সালে তিনি কাউন্সিলরদের ভোটে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ২০০৬ সালে তিনি ১৪ দলের কুমিল্লা জেলা শাখার সমন্বয়ক হন। ২০০৮ সালে তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পান। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা জানান,আফজল খান অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি কুমিল্লা শিল্প ও বণিক সমিতির একাধিকবার সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহসভাপতি ছিলেন। সমবায় আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শ্রেষ্ঠ সমবায় পুরস্কার হিসেবে স্বর্ণপদক ও বৃক্ষরোপণে অবদান রাখায় স্বর্ণপদক পেয়েছেন তিনি।