[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

আদালতে অর্থ পাচারকারীদের ৪৩ জনের তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকা আরও বড় হবে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক এসব কথা বলেন।

মানববন্ধনে দুদকের মহাপরিচালক ও পরিচালক, বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, ‌‘আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে অনুসন্ধান ও তদন্তে যে দীর্ঘসূত্রিতা আছে, ওটা কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সেই পরিকল্পনা করা। আমরা বাস্তব পরিকল্পনা করছি, কীভাবে দুর্নীতি নিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা তার কাছাকাছি যাওয়া যায়।’

দুদক অর্থ পাচারকারীদের যে তালিকা উচ্চ আদালতে জমা দিয়েছে সেই বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘অর্থপাচারের বিষয়টা মানি লন্ডারিং আইনের মধ্যে আছে। আইনের ২৮টি ধারা আছে, শুধুমাত্র একটি ধারা ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ পাচার হয় সেই অংশটা আমরা দেখতে পারি। ওইটা দেখার জন্য আমাদের তদন্ত-অনুসন্ধানের জন্য নির্ভরশীল থাকতে হয় বিভিন্ন সংস্থার ওপরে। তারা যদি সময়মত ও যথাযথভাবে চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র সরবরাহ করে তবেই আমরা দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে আনতে পারি।

অন্যদিকে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘অর্থ ফেরত আনার জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট অনেক দেশে এমএলএআর পাঠানো হয়েছে। আদালতের রায়ের মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনা হবে।’

দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক বলেন, ‘অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে আইনি জটিলতায় আছে দুদক। ২৮টি ধারার ২৭টি দুদকের কাছে নেই। তারপরও আমরা থেমে থাকিনি। দুদক আদালতে যে ৪৩ জনের তালিকায় দিয়েছে, সেই তালিকায় দুদকের আইনি যা করার সুযোগ আছে তা করা হবে। তালিকা আরও বড় হতে পারে।’

প্রসঙ্গত, গত ৫ ডিসেম্বর অর্থ পাচারকারী ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তালিকা আদালতে জমা দেয় দুদক, এর মধ্যে ১৪টি নাম এসেছিল ‘পানামা পেপার্সে’। আর ‘প্যারাডাইস পেপার্সে’ এসেছিল ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের পাশাপাশি বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও তার ছেলে তাবিথ আউয়ালের নাম রয়েছে।

এর আগে, সকালে গণজাগরণের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধের দৃঢ় অঙ্গীকারে দিবসটির বিভিন্ন কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। সকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হয়।

‘আপনার অধিকার, আপনার দায়িত্ব : দুর্নীতিকে না বলুন’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একযোগে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস।

জাতিসংঘ ২০০৩ সালে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ঘোষণা করে। সে হিসেবে এবার ১৯তম আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ সারা বিশ্বকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যেই ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (আনকাক) মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ আনকাকের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন শুরু করে। যদিও ২০১৭ সাল থেকে দিবসটি সরকারিভাবে পালিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *