[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]
সৌদি আরবের আভা বিমানবন্দরের দিকে ধেয়ে আসা একটি ড্রোন দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী আকাশে প্রতিহত করেছে। এ সময় এই ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে বিমানবন্দরে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সৌদি জোট বলছে, আভা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বিমান চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত জোটের পৃথক দু’টি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের দর্শনার্থী এবং কর্মী রয়েছেন।
সৌদি আরবের এই বিমানবন্দর লক্ষ্য করে প্রায়ই হামলা চালায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদির দক্ষিণাঞ্চলীয় এই রাজ্য একেবারে ইয়েমেন সীমান্তের কাছে অবস্থিত। এছাড়াও দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হুথিরা। এসব ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের বেশিরভাগই সৌদি জোট প্রতিহত করলেও বিভিন্ন সময়ে কয়েকজন নিহত ও আরও অনেকেই আহত হয়েছেন।
সৌদি জোটও প্রায় প্রতিনিয়ত ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হুথিদের নজিরবিহীন ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই ভারতীয় এবং এক পাকিস্তানির প্রাণহানির পর ইয়েমেনে হুথিদের ব্যোলিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ এলাকা ধ্বংস করে দেয় আমিরাত।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
কিন্তু এই অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।
ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ। জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছেন।