[ম্যাক নিউজ রিপোর্ট:- আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়।।]
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের পূর্ব পাড়ার মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের মৃতদেহ কবর দেওয়ার ১৭ বছর পর মাটি খুঁড়ে কঙ্কাল তুলে বাড়ির আঙ্গিনায় মাজার বানিয়েছে নিহতের ছেলে মোঃ শাহীন জালালী। নিহত মোঃ সিদ্দিকুর রহমান এলজিডির একজন প্রকৌশলী ছিলেন। মোঃ শাহীন জালালী নিজেকে একজর পীর দাবী করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়,প্রকৌশলী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ২০০৫ সালে নভেম্বরের ২২ তারিখে স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যুবরণ করার পর তার লাশ বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের ফকিরবাজার সংলগ্ন পুকুরের পশ্চিমপাড়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রায় ১৭ বছর পর (১৭ মার্চ ২০২২) বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্দিকুর রহমানের কবর থেকে লাশের কঙ্কাল তুলে আধা কিলোমিটার দূরে শাহীন জালালীর বাড়ির আঙ্গিনায় পুনরায় দাফন করা হয় এবং রাতারাতি মাজার বানিয়ে ফেলে। মাজার স্থাপনের দৃশ্য দেখে এবং এ বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কবরের চারপাশ ইট দিয়ে দেয়াল তৈরি করে মাজারের নমুনা করে রেখেছে এবং মোমবাতি জালানো। পাশে একটি বড় স্পিকারসহ রয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানায়, প্রশাসন ও এলাকাবাসীকে না জানিয়ে কবর থেকে লাশ উত্তলন করেছে।অত্র এলাকায় আগে কোন মাজার ছিল না। রাতারাতি মাজার স্থাপন করার অপচেষ্টা ভন্ডামী ছাড়া আর কিছুই নয়। মাজারের নামে যেন কোন প্রকার ভন্ডামী বা অশ্লীলতা সৃষ্টি হতে না পারে সে ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
মোঃ শাহীন জালালী নিজেকে জালালীয়া দরবার শরীফের খেলাফত প্রাপ্ত পীর দাবী করে তালাশ বাংলাকে জানান, তার বাবা সিদ্দিকুর রহমান মৃত্যুর আগে ওসিয়ত করে গেছিলেন তার লাশ যেনো বাড়ির আঙ্গিনায় এবং নিজের জায়গাতে এবং আমার মায়ের পাশে দাফন করার জন্য। কিন্তু আমার ভাইয়েরা আমার বাবার ওসিয়ত মানে নাই। যে জায়গাতে দাফন করা হয়েছিল সে স্থানটা আমাদের পারিবারিক কবরস্থান না সেটা সামাজিক কবরস্থান। মাজার বিষয়ে তিনি বলেন, এইটা মাজার না এখানে একটি ডেইন আছে তাই কবরের সু-রক্ষার জন্য ইটের দেয়াল স্থাপন করেছি।
এ বিষয়ে শাহীন জালালীর মুরিদান আনন্দপুর গ্রামের শাকিল জানান, আমরা বাবাজান থেকে শুনেছি লাশ তুলে বাড়ির পাশে কবর দেওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখাইছে।
এ বিষয়ে ফকিরবাজার ইসলামিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মোঃ আবুল বাশার বলেন, আল্লাহ্ অলি বা বুজুর্গ ব্যক্তি কবর ছাড়া মাজারের নমুনা করা ঠিক হবে না। আমার জানামতে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান কোনো আল্লাহ অলি বা বুজুর্গ লোক ছিলো না।
এ বিষয়ে বুড়িচং দরবার শরীফের পীর সাহেব আব্দুল হালিম বলেন,সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টা দেখতে হবে এবং জেনে আমি মন্তব্য করতে পারবো, না হয় মুফতিদের কাছ থেকে জেনে বলা যাবে।
এ বিষয়ে বাকশীমূল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও মসজিদের খতিব এবং বাকশীমূল ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল হযরত মাওলানা মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, এতো বছর পরে লাশের কঙ্কাল তুলে মাজার তৈরি করা এগুলো ভন্ডদের কাজ।
খারেরা গ্রামের যুবলীগের নেতা এম এ কাইয়ুম বলেন, এখানে কোনো মাজার করা হয়নি বাবার ওসিয়ত তার ছেলে পালন করেছে।
কুমিল্লা সদর সার্কেল সোহান সরকার, বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার হালিমা খাতুন ও বুড়িচং থানার ওসি আলমগীর হোসেন অবগত হওয়ার পর সরেজমিনে এসে থানার এসআই বিনোদ দস্তিদার একটি রির্পোট তৈরি করে নিয়ে যান।তিনি জানান,ওসি স্যার এ বিষয়টি দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।