[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে দুর্নীতি দমন আইনের ২০০৪ সালের ২৬ (২) ও ২৭ (১) এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং আইনের ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার পর পরই দুদক থেকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তাও হয়েছেন সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।

মামলাসূত্রে জানা গেছে, আরডিএর সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানের বিপুল অবৈধ সম্পদের অভিযোগ হলে ২০১৭ সালে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেন। শেখ কামরুজ্জামানকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ হয়। একাধিকবার তাকে দুদক কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শেষে তিনি তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দুদক থেকে তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর সত্যতা নিরূপণে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া ও বর্তমান নিবাস রাজশাহীতে মাঠে পর্যায়ে ব্যাপক অনুসন্ধান পরিচালনা করা হয়।

দুদক সূত্রমতে, শেখ কামরুজ্জামান আয়ের সঙ্গে অর্জিত সম্পদের ব্যাপক অসামঞ্জস্য পাওয়া যায়। অনুসন্ধান শেষে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৬৮৬ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন প্রদান করা হয়। সে মোতাবেক বুধবার দুদক শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, দুদকের নোটিশ প্রাপ্তির পর শেখ কামরুজ্জামান তার অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তি গোপন করার লক্ষ্যে তড়িঘড়ি করে মালিকানা স্থানান্তর করেন। সম্পদের প্রকৃতি বদল করেন। একই সঙ্গে উৎস গোপন করার বিভিন্ন চেষ্টা করেন।

দুদক আরও জানায়, শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে আরডিএতে ঘুস দিয়ে নিয়োগ লাভ ও চাকরি প্রাপ্তির অভিযোগে আরও একটি দুর্নীতির মামলা রাজশাহীর স্পেশাল জজ আদালতে চলমান আছে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করে দুদক। এই মামলায় সে উচ্চ আদালতে জামিনে থাকার কথা দাবি করেছেন। যদিও উচ্চ আদালতের আদেশের কোনো কপি গত দুই বছরেও তিনি আদালতে দেখাতে পারেননি বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পিপি সূত্রে জানা গেছে।

আরও জানা যায়, শেখ কামরুজ্জামান বর্তমানে রাজশাহী মহানগরীর পবা নতুনপাড়া এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করেন। তবে তার কুষ্টিয়া জেলার বারখাদা এলাকায় তার স্থায়ী নিবাস। বাবার শেখ ছলিম উদ্দিন। শেখ কামরুজ্জামান কুষ্টিয়া এলাকাতেও বিপুল সম্পদ করেছেন। আবার রাজশাহী মহানগরী ও পবা এলাকায় জমি বাড়ি ও পুকুর জলাশয় কিনেছেন। যা তার বর্তমান জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে পুরোপুরি অসঙ্গতিপূর্ণ।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শেখ কামরুজ্জামান সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে আরডিএতে যোগদান করলেও পরবর্তীতে তিনি এষ্টেট অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে দোকান ও প্লট বরাদ্দে ব্যাপক দুর্নীতি করেন। এভাবেই সে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You missed