[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]
হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন পুলিশের দুই কর্মকর্তা৷
রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি মশিয়ার রহমানের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়৷ সাক্ষ্য শেষে তাদের জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবউদ্দিন আহমেদ জানান, সোনারগাঁ থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক তবিদুর রহমান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাকিবুল ইসলাম উজ্জ্বলের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত৷
এখন পর্যন্ত মামলার বাদী, সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সোহাগ রনি, সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টের অভ্যর্থনা কক্ষের (রিসিপশন) কর্মী মাহবুবুর রহমান ও আনসার সদস্য মো. ইসমাইলসহ ১৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলায় মোট সাক্ষীর সংখ্যা ৪৩ জন৷ আগামী ৩০ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে মামলাটি ‘সাজানো’ দাবি করে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, “সাক্ষীদের আমরা জেরা করেছি। তাদের কথাবার্তা এলোমেলো পাওয়া গেছে৷ সেদিন রিসোর্টে সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিল বলে সাক্ষীরা জানিয়েছেন৷ তখন পুলিশ থাকলেও মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়নি।”
“পরবর্তীতে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে সাজানো মামলাটি দায়ের করা হয়৷ ন্যায়বিচার পেলে মামুনুল হক বেকসুর খালাস পাবেন।”
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামি মামুনুল হককে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম শেষে দুপুরে তাকে পুনরায় কাশিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
গত বছরের ৩ এপ্রিল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়্যাল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ স্থানীয় লোকজন। তখন ওই নারীকে নিজের বিবাহিত দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন মামুনুল।
ঘটনা জানাজানি হলে সন্ধ্যায় হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা ওই রিসোর্ট ঘেরাও করেন। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকা অবস্থায় মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা।
পরে রাতভর সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন উত্তেজিত হেফাজত কর্মীরা। ওই ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়।
ঘটনার প্রায় মাসখানেক পর ৩০ এপ্রিল মামুনুলের বিরুদ্ধে তারই দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা ওই নারী সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন মামুনুল হক। তাদের আইনত বিয়ে হয়নি।
এই মামলায় গত ৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়।
এর আগে ১৮ এপ্রিল ঢাকায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে।