[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

চাকরি হারিয়ে ভাইয়ের দোকানে বসেছেন দুদকের সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন।
চট্টগ্রামে আলোচিত সাবেক দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের করা মামলার শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার। চাকরি বহাল ও অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে এই মামলার রায়ের আগেই একটি মিডিয়া মনগড়া সংবাদ প্রচার করার অভিযোগ করেছেন শরীফ উদ্দিন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এমন দাবি করেন তিনি।



ফেসবুকে পোস্টে শরীফ লেখেন, ‘তখন যদি ওই বিশেষ মিডিয়ার মালিকের আত্মীয়ের বিরুদ্ধে মামলা না করতাম, তাহলে আজ এই দুর্বল স্ক্রিপ্ট জয়েন্ট ভেঞ্চার এ আসতো না।…তদানীন্তন ও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনো কমেন্ট করা সমীচীন নয়। মামলা করার পর থেকে ওই বিশেষ মিডিয়াটি আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তবে, ওই বিশেষ মিডিয়া বাদে সব মিডিয়া শুরু থেকে পাশে ছিল বলে আমার এখনো কিছু হয়নি। ভালোবাসি দেশকে ও দেশের মানুষকে। সবাইকে আল্লাহ নিরাপদ রাখুক।’

সংবিধানে ব্যক্তিগত আলাপ প্রচার না করার বিষয়ে নিষেধ আছে উল্লেখ করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে শরীফ আরও লেখেন, ‘আর হ্যাঁ, সংবিধানে কারও ব্যক্তিগত আলাপ প্রচার না করার অধিকার দিয়েছে। তাও কেটে কেটে প্রচার করেছে মিডিয়াটি। যেখানে আমার ঘুষ লেনদেনের কোনো তথ্য নেই। হয়তো, সামনে প্রচার করবে শ্বশুরের বাড়িটি আমার। ফ্ল্যাটটি আমার। আমার গাড়ি আছে, বাড়ি আছে।’

শরীফ লেখেন, ‘বিচারের জন্য আজ প্রায় ২ বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। সামনে আমার মামলার রায় আছে। ওই রায়ে যাই হোক, আমি মাথা পেতে নেব। তবে মামলার রায়ের আগে এ ধরনের মনগড়া সংবাদ খুবই ব্যথিত করেছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীফ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এতদিন পর এমন নিউজের উদ্দেশ্য সবাই জানে। কিছুদিন আগে আমার করা মামলার আসামিরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনটিও ওই মিডিয়ার মালিকের আত্মীয় করাইছে। তদন্তের স্বার্থে একজন কর্মকর্তা বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু আমার কথা কেটে কেটে প্রচার করেছে। তবুও ঘুষ লেনদেনের কোনো তথ্য পায়নি তারা।’

শরীফ বলেন, ‘দুদক থেকে অপসারিত হয়েছি প্রায় ১ বছর আগে। দুদক, সমন্বিত কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ থেকে পটুয়াখালীতে বদলি হওয়ার পর আমার প্রায় আড়াই বছর দাপ্তরিক কোনো কাজকর্ম ছিল না বিধায় অনেকটা ওএসডি অবস্থায় ছিলাম। চাকরি থেকে অপসারিত হয়ে চাকরি ফিরে পাওয়ায় জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কোনো চাকরি ফেরত না পেয়ে ভাইয়ের দোকানের ক্যাশিয়ার হিসেবে চাকরি করেছি। ভাইয়ের দোকানে চাকরি করার বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচারণার ফলে বেসরকারি একটি ওষুধ কোম্পানিতে বর্তমানে চাকরিতে যোগদান করেছি। কিন্তু এটাও দুর্নীতির সিন্ডিকেটের সহ্য হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমার মামলার সুপারিশকৃত আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে আমাকে চিরতরে ধ্বংস করার জন্য, একটি বিশেষ মিডিয়া গ্রুপ আমার অসহায় পরিবার, আত্মীয়স্বজন, ভাইদের বন্ধু, আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদেরকে সামাজিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করছে। এমনকি যেসব সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা আমার বিষয় কিংবা আমার দাখিলকৃত প্রতিবেদনের পক্ষে সরব থেকেছেন, তাঁদেরকেও বারবার ফোন দিচ্ছে ওই বিশেষ মিডিয়াটি।’

এর আগে গত ১৬ নভেম্বর মো. শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাঠে নামেন দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর করা মামলার আসামিরা। সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে শরীফের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি, স্বজনপ্রীতি ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আনেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন—কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. সারওয়ার হোসেন, একই প্রতিষ্ঠানের সার্ভেয়ার দিদারুল আলম ও আরএফ বিল্ডার্সের মালিক দেলোয়ার হোসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *