[ ম্যাক নিউজ রিপোর্টে:-রুবেল মজুমদার কুমিল্লা প্রতিনিধি।।]
কুমিল্লার লালমাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক মো: রুহুল আমিনের উপর উপজেলার ছাত্রলীগের হামলা ও মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার ( ১৯ ফেব্রয়ারি) দুপুর ২টায় লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানা যায়,কুমিল্লার লালমাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রুহুল আমিন। তবে পথে ছাত্রলীগের সভাপতি নাছির মির্জার নেতৃত্বে ৮/৯জন ছাত্রলীগ কর্মী চেয়ারম্যান প্রার্থীর উপর হামলা করে। এসময় রুহুল আমিনের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেওয়া তিনি আর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি।
এ বিষয় লালমাই উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি নাছির মির্জার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশ করার অনিচ্ছুক ঘটনার সময় উপস্থিত এক আওয়ামীলীগ নেতা বলেন,মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি (রোববার) দুপুর অনুমান 2 টায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী, লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, লালমাই উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সেক্রেটারী অধ্যাপক মো: রুহুল আমিন মোটরসাইকেলযোগে সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের গেইটে যান। তখন পূর্ব থেকে গেইটে অবস্থান করা বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নাছির মির্জার নেতৃত্বে ৮/৯জন ছাত্রলীগ কর্মী চেয়ারম্যান প্রার্থীর উপর হামলা করে।
এসময় হামলাকারীরা তাকে লাঞ্চিত করে তার সাথে থাকা মনোনয়নপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলের ৫ ফিট দুরুত্বে লালমাই থানার কনস্টেবল ইমরান ডিউটিরত থাকলেও চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সহায়তা করেনি।
হামলার শিকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: রুহুল আমিন বলেন, রোববার দুপুরে আমি মনোনয়নপত্র জমা দিতে উপজেলা গেইটে যাই। মোটরসাইকেল থেকে নামার আগেই ছাত্রলীগ নেতার নাছিরসহ ৮/৯জন ছেলে আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে উপজেলার পশ্চিমে সাদ্দামের চা দোকানের পিছনে নিয়ে আমার মনোনয়নপত্র, ব্যাংক চালানের কপিসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছিরে ফেলে। পরবর্তীতে আমি আর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারিনি।
আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘নাসির আমাদের ছাত্রলীগ করেন, এটা ঠিক। শুনেছি একজনের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এটা কে বা কারা করেছেন, সেটা জানি না।’
লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হানিফ সরকার বলেন, কেউ কোথায় হামলার শিকার হয়েছে এ বিষয় আমাদের জানা নাই। এছাড়া আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি।
লালমাই উপজেলা নির্বাচন কর্র্মকতা ও সহকারি রির্টানিং অফিসার সৈয়দা সাদিকা সুলতানা বলেন,ঘটনাটি সত্যি, আমাদের অফিসের সামনে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মারধর করছে। কেউ বা কারা হামলা করেছে আমরা বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফোরকান এলাহি অনুপম বলেন,আমি জেলা মিটিং ছিলাম। বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাছ থেকে শুনলাম। তবে এ ধরনের কোনো ঘটনার ঘটলে ,আমরা নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ।
কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হলে ওই প্রার্থী আজ বিকেল চারটার মধ্যে তাঁর কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। অথবা তার কোনো লিখিত অভিযোগ করতে পারতেন, বিষয়টি আমরা দেখবো
উল্লেখ্য কুমিল্লার লালমাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ওরফে শাহীন। কামরুল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বড় ভাইয়ের ছেলে। আগামী ১৬ মার্চ ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।