[ম্যাক নিউজ রিপোর্ট:- কুমিল্লা প্রতিনিধ।]
বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৫ সংসদীয় আসন। এই আসনটিকে বিএনপি’র দুর্গ হিসেবে বলা হলেও বারবার নেতা পরিবর্তনের কারনে কর্মিরা বিভ্রান্ত হচ্ছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে মাঠে একাধিক নেতার দেখা মিললেও আন্দোলন কর্মসূচীতে তাদের দেখা মেলেনা। একেক নির্বাচনে একেক নেতার নেতৃত্বের ফলে বিভক্ত হয়ে পরে কর্মীরা।
তবে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এই আসনের কর্মিদের সুখে-দুখে পাশে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন হাজী জসিম উদ্দিন জসিম। যার ফলে কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে জসিম উদ্দিন।
বিশেষ করে ২০০৮ সাল থেকে বিএনপি বিরোধীদল হওয়ার পর সরকার বিরোধী সকল আন্দোলন- সংগ্রামে মাঠে ছিলেন জসিম উদ্দিন। আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে থেকে হয়েছেন একাধিক মামলার আসামী। মামলার আসামী হয়েও মাঠ ছাড়েননি তিনি। নেতাকর্মীদের মামলা-মোকদ্দমাসহ সুখে-দুখে তাদের পাশে থেকে মন জয় করেছেন তিনি।
দলের প্রতি তার এই শ্রম-ঘাম ও ত্যাগ এর ফলে সর্বশেষ কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব করে মূল্যায়ন করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
হাজী জসিম উদ্দিন জসিমের রাজনীতি শুরু হয় স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন দিয়ে। তৎকালিন টগবগে ছাত্রদল নেতা জসিম উদ্দিন ঢাকায় স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নিজেকে ছাত্র রাজনীতিতে সংস্পৃকতা করেন।
ঢাকায় ছাত্র ও যুব রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়ে ২০০০ সালে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আজ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন জসিম উদ্দিন। তারপর থেকে অদ্যবদি কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) বিএনপির রাজনীতে শ্রম, মেধা ও যোগ্যাতা দিয়ে কর্মিদের মনে জায়গা করে নেন তিনি।
জসিম উদ্দিন ২০০১ সালে সাবেক মন্ত্রী আকবর হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেন পরিষদের কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম রাবেয়া চৌধূরী ও হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন পরিষদের কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এর দায়িত্ব পালণ করেন।
কেন্দ্র ঘোষিত সকল কর্মসুচিতে রাজপথে অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসেন তিনি। দলের দুঃসময়ে বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া নেতাকর্মিদের শেষ আশ্রয়স্থলে পরিনত হয় জসিম উদ্দিন। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও ছেড়ে যায়নি রাজনীতির মাঠ। রাজনীতি করতে গিয়ে হয়েছেন একাধিক মামলার আসামী। তারপরও নেতাকর্মিদের ভালবেসে পাশে ছিলেন সবসময়।
নিজের যোগ্যতায় বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ার পাশাপাশি জেলার রাজনীতিতে নিজের জায়গা করে নেন তিনি। দলের প্রতি শ্রদ্ধা- ভালবাসা ও একনিষ্ঠতার ফলে ৩০ মে ২০২২ সালে কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়।
জেলার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কুমিল্লা দক্ষিন জেলার বিএনপির আন্দোলন আরও গতিশীল হয়ে উঠে। কুমিল্লা টাউনহল মাঠে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশের একদিন আগে ৫০ হাজারের অধিক নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হয়ে নজর কারেন কেন্দ্রীয় নেতাদের।
এর পর থেকে অদ্যবদি জেলার সকল আন্দোলনে বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে হাজির হয়ে কর্মসূচি সফল করতে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি।
দলের প্রতি নিজের এই ভালবাসা দেখে কুমিল্লা-৫ আসনের বিএনপির নেতাকর্মীরা জসিম উদ্দিনকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়।
নেতাকর্মীরা বলেন, গত ১৫ বছর বিএনপির অনেক নেতাই রাজনীতির চেয়ে নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কেন্দ্র ঘোষিত কোন কর্মসূচিতে তাদের অংশগ্রহন ছিল না। দলের বড়-বড় পদ নিয়ে ঘরে বসে ছিল। সরকারের লোকজনের সাথে মিলেমিশে নিজের ব্যবসা বাড়িয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এখন নির্বাচন উপলক্ষে আবারও মাঠে এই হাইব্রিড নেতাদের দেখা মিলছে। এই নির্বাচনে সুবিধাভোগি হাইব্রিড নেতাদের প্রতিহত করে জসিম উদ্দিনের মত ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে।
বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী আরও বলেন, এই আসনে নির্বাচন আসলেই নতুন নেতার আগমন ঘটে। নির্বাচন শেষে ৫ বছর আর তাদের খুজে পাওয়া যায় না। কিন্তু জসিম উদ্দিন বছরের পর বছর নিঃস্বার্থ ভাবে আন্দোলন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পরেছে। মামলা-হামলা, সুখে-দুখে কর্মীদের পাশে থেকেছে।
তাই আগামী নির্বাচন থেকে এই আসনে স্থায়ী নেতা হিসেবে জসিম উদ্দিনকে দেখতে চায় বিএনপির নেতাকর্মীরা।