[ম্যাক নিউজ রিপোর্ট:- মাহফুজ বাবু কুমিল্লা।]


কুমিল্লা তিতাস মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে প্রসূতির সিজার চেষ্টা! নবজাতককে হত্যা ও প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলে দেয়ার অভিযোগে হাসপাতালের চেয়ারম্যান পরিচালকসহ ৫জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের। কুমিল্লা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বেগম মেহনাজ রহমান এর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা ডিবিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী প্রসূতি সাবিনা ইয়াসমিন এর স্বামী মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে বুধবার দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন।

বাদির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট তোফায়েল আহমেদ। অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, হাসপাতালের চেয়ারম্যান পিন্টু কুমার দাশ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির আহম্মেদ, আওলাদ হোসেন, খোরশেদ আলম ও তাসলিমা রিজভী লাইলী।

গত ৭ আগষ্ট দুপুরে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন প্রসূতি স্ত্রী কে নিয়ে নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার তিতাস মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে আসেন। নিজেকে হাসপাতালের গাইনী ডাক্তার পরিচয় দিয়ে তাসলিমা রিজভী লাইলী ও হাসপাতালের কয়েকজন প্রসূতিকে ভর্তি করান। পরে দীর্ঘ সময় ডেলিভারির চেষ্টা করেন। এসময় ভুয়া ডাক্তারের অপচিকিৎসার ফলে নবজাতকের মৃত্যু ও ২৫ বছর বয়সী প্রসূতি মায়ের জরায়ু ফাটিয়ে ফেলেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ফোনে হাসপাতালে আসেন গাইনী বিশেষজ্ঞ জেনিফার শারমিন। তিনি জানান, দ্রুত সিজারের মাধ্যমে মৃত কন্যা নবজাতকে মায়ের পেট থেকে বের করা হয়। রুগীর জীবন রক্ষায় তৎক্ষনিক জরায়ু কেটে ফেলে দিতে বাধ্য হন। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে আসার পূর্বেই বিভিন্ন উপায়ে ডেলিভারি চেষ্টা করে তাসলিমা রিজভী লাইলী। এতে প্রসূতির জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পরে। অপারেশনের পরে প্রসূতীকে দ্রুত আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে হাসপাতালের ডাক্তার পরিচয় দেয়া তাসলিমা রিজভী লাইলী। এবিষয়ে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
এ বিষয়ে গত ৯আগষ্ট জেলা সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগও করেন বলে জানান ভুক্তভোগীর স্বামী মোশাররফ হোসেন। স্ত্রীর জরায়ু কেটে তাকে সন্তান জন্মদানে অক্ষম করে দেয়া ও নবজাতক হত্যার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি তার।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার জানান, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *