[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নে সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারার জের ধরে দুই ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের মরদেহ দাফন কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের হস্তক্ষেপে মৃত্যুর ১৬ ঘণ্টা পর লাশ রাতে দাফন করা হয়।
সোমবার চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ের ভাটেরগাঁও মজুমদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মৃত আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম মজুমদারের স্ত্রী আমেনা খাতুন (৮৫) বার্ধক্যজনিত কারণে সোমবার দুপুর ১টায় ঢাকার উত্তরায় এক ছেলের বাসায় মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর লাশ গ্রামের বাড়িতে এনে অন্য ভাইদের জানানো হলে তারা এসে মরদেহ রেখেই সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সন্তানরা দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন। সম্পত্তির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ দাফনেও বাধা দেন নাকিবুল ইসলাম ও সৌদি প্রবাসী নজরুল ইসলাম দুই ভাই।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক ছেলে নাকিবুল ইসলাম জানায়, আমাদের উত্তরার রাজউকের ৩নং সেক্টরে ৫ কাটা সম্পত্তি আমরা ৫ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে লিখে দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা ছোট দুই ভাই তাদের নামে বাবার কাছ থেকে জোড় করে লিখে নিয়ে যান।
এ দিকে তার অন্য এক ভাই জানান, আমার মা গত ১০ দিন যাবত উত্তরার ৭নং সেক্টরের হাই কেয়ার হাসপিটালের আইসিওতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের সাথে আমাদের কোন যোগাযোগও ছিল না। আমার বড় ভাই নজরুল ইসলাম দীর্ঘ ৩৮ বছর সৌদি আরব ও নোকিবুল ইসলামও দীর্ঘ ২৫-৩০ বছর যাবত দুবাই ছিলেন। আমার বাবা সেনাবাহিনীতে থাকাকালীনও আমার মা দীর্ঘ ৩০ বছর আমার কাছেই ছিলেন। জীবদ্দশায় তারা দুই ভাই মায়ের কোন খোঁজ খবর রাখেন না। আজ আসছে সম্পত্তির ভাগাভাগি করতে।
শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোহাগ পাটওয়ারী জানান, এ ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি ঘটনাস্থলে যাই। তাদের জমি-জমার বিষয়টির সমাধান করে দেবো বলে আশ্বস্ত করি। তারপরও তারা লাশ দাফন করতে রাজি হয়না। ততক্ষণে মরদেহ দাফন করতে আসা আত্মীয় স্বজন ফিরে যান। রাত ৯টায় জানাজা হলেও সন্তানদের বাধায় মায়ের লাশ দাফন করা হয়নি দীর্ঘ ১৬ ঘন্টায়ও। মরদেহ থেকে গন্ধ বের হয়ে গেছে। থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার এস আই লোকমান জানায়, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে এসে দেখি এই অবস্থা। সন্তানরা তাদের মায়ের লাশ কোন ভাবেই দাফন করতে দাবেন না। পরে জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে রাত ২ টায় তাদের পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।