[ম্যাক নিউজ রিপোর্ট:- মাইনুল হক কুমিল্লা।]

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আকম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি বলেছেন, কবি কাজী নজরুল ছিল আমাদের প্রেরণার অংশ। আমরা যখন মুক্তিযোদ্ধে যাই, তখন কবি নজরুল ছিল প্রেরণার অংশ, আমাদের প্রেরণা ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। কি অদ্ভুত মিল এই আগস্ট মাসেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, আগস্ট মাসেই নজরুল তার জীবন ত্যাগ করে। কাজী নজরুল এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবসন্তান হচ্ছে জাতিব পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।

রোববার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় নগরীর নজরুল ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আজকে আমরা যেই গান গাই, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ না করলে অনেকগুলো রবীন্দ্রনাথ সংগীতের মধ্যে এটি একটি সংগীত হিসেবে থাকত। জাতীয় সংগীতে রূপান্তরিত হত না। একইভাবে কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙ্গে ফেল, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আর ভাঙ্গার সুযোগ ছিল না। এই লৌহ কপাট ভাঙ্গার জন্যে হাজার হাজার বছর যাবত চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ পারে নাই।

চেষ্টা করেছে মাস্টার দা সুর্য সেন। অস্ত্রাগার লুন্ঠন করেছে, জীবন দিয়েছে, লৌহ কপাট ভাঙ্গতে পারে নাই। তিতুমীর বাঁশের কেল্লা তৈরী করেছে, জীবন দিয়েছে, ভাঙ্গতে পারে নাই লৌহ কপাট, খুদিরাম বাঁশের মঞ্চে জয়গান গেয়েছে, লৌহ কপাট ভাঙ্গতে পারে নাই। নেতাজি সুবাস চন্দ্র বসু বলেছে আমাকে তোমরা রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দিব। অনেক রক্ত দিয়েছি, স্বাধীনতা দিতে পারে নাই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছে রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, বাংলার মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব। সেই বাঙালিকে জাতি হিসেবে রূপান্তিত করেছে। সেই লৌহ কপাট ভেঙ্গে আজকে আমরা সারা বিশ্বে একটি প্রতিষ্ঠিত জাতিতে রূপান্তরিত হয়েছি।

জেলা প্রশাসন, নজরুল ইন্সটিটিউট কুমিল্লা কেন্দ্র ও নজরুল পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক পঙ্কজ বড়ুয়া।

বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মংনেথোয়াই মারমা।

অনান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আসাদুজ্জামান, নজরুল গবেষক অধ্যাপক শ্যামা প্রসাদ ভট্রাচার্য, জেলা কালচারাল কমপ্লেক্সের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন নজরুল পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক অশোক বড়ুয়া।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নজরুল পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল আমিন ও আবৃত্তিকার মাহাতাব সোহেল।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রোটারিয়ান দিলনাশী মহসিন, বিশিষ্ট নাট্যজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শাহজাহান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর কানিজ ফাতেমা সহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

আলোচনা শেষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।

এর আগে সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে চেতনায় নজরুল মুর্যালে ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন সাংসদ হাজী আকম বাহাউদ্দিন বাহার, জেলা প্রশাসনের পক্ষে পঙ্কজ বড়ুয়ার নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মংনেথোয়াই মারমার নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, নজরুল পরিষদ কুমিল্লা, নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র কুমিল্লা, কালচারাল কমপ্লেক্স কুমিল্লা, বাংলা সংস্কৃতি বলয়, জাতীয় রবিন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ, নজরুল মেমোরিয়াল একাডেমী, কুমিল্লা জিলা স্কুল, কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, গুলবাগিচা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, যাত্রিক নাট্য গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *