[ম্যাক নিউজ রিপোর্ট:- নিজস্ব প্রতিবেদক]
কুমিল্লা বুড়িচংয়ের ময়নামতি ইউপির ঢাকলাপাড়া গ্রামে পুরুষশূন্য প্রবাসী পরিবারের উপর হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিউলি আক্তার ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগ, স্বজন ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, পূর্ব বিরোধের জেরে গত ১০ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক সারে ১০ টায় বহিরাগত প্রায় ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্র নিয়ে ঢাকলাপাড়া এলাকার প্রবাস ফেরত কবির হোসেনের বাড়িঘরে অতর্কিত এ হামলা চালায়। পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে বাড়িতে কোন পুরুষ লোক না থাকায় প্রতিবেশী সিরাজ ড্রাইভার, তার দুই ছেলে আবুল কালাম, আবু তাহের ও সিন্দুরিয়াপাড়া এলাকার রহুল আমিন সহ বহিরাগত ভারাটে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বাড়ির দেয়ালে লাগানো সিসি টিভি ক্যামেরা ও গাড়ির গ্যারেজে ব্যপক ভাংচুর করে
। এসময় গ্যারেজে থাকা গাড়ির চাকার ৪টি রিং লুট করে নিয়ে যায়। শাবল ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে টিনের বেড়া, চাল, ও গ্যারেজের দেয়াল কুপিয়ে লন্ডভন্ড করা হয়। এসময় বাঁধা দিতে এলে সন্ত্রাসী বাহিনী শিউলি আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যদের আক্রমণ করতে এলে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে নিজেকে রক্ষা করেন বলে জানান। সিসি টিভি ফুটেজে ঘটনার বিস্তারিত দেখিয়ে বেশ কয়েকজন কে শনাক্ত করেন বলেও জানান তারা। রাতের এ ঘটনার সময় অতর্কিত হামলা ভাংচুর ও সোর চিৎকারে আশেপাশের পরিবারের লোকজন আতংকিত হয়ে পরেন জানান এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে ঘটনাস্থলে এলে বহিরাগতরা ১০/১২টি মটর সাইকেল যোগে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
পরদিন ১১ ডিসেম্বর এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না জানিয়ে ভুক্তভোগী শিউলি আক্তার ও তার কন্যা জানান, থানায় অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই নানান ভাবে খুন গুমের হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। সিরাজ ড্রাইভার মামলাবাজ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। ভূমিদস্যু ও মামলাবাজ সিরাজ এলাকায় বহু লোকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এখন আমরা আতংকে রয়েছি আবার কখন কোথায় হামলা করে। ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না।
এবিষয়ে জানতে সিরাজুল ড্রাইভার ও তার পরিবারের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কেউ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। একাধিকবার ফোন করা হলেও সিরাজুল ড্রাইভারের ছেলেরা ফোন রিসিভ করেননি।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন থেকেই সিরাজুল ইসলাম ড্রাইভার ও কবির হোসেনের পরিবারের সাথে বিরোধ চলে আসছে। একাধিকবার কথা কাটাকাটি, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, হামলা ও ভাংচুরের খবর পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে দেখতে পাওয়া যায়নি। কবির হোসেনের বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা ও গাড়ির গ্যারেজ ভাংচুর ও লন্ডভন্ড অবস্থায় পরে থাকতে দেখেছি। এবিষয়ে আগে স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যান সহ বেশ কয়েকবার মিমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। উভয় পক্ষই আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা চলমান রয়েছে। রাতের আধারে এধরণের হামলা ঝগড়াঝাটি কখনোই কাম্য নয়।
জানতে চাইলে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খন্দকার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, এবিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।