[ রিপোর্টে:- কুবি প্রতিনিধি ]

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের নৃশংস হত্যা এবং সুমাইয়া আফরিনের ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিতের দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা কান্দিরপাড়ের টাউন হলে এ কর্মসূচী পালন করেন তারা।

এসময় সুমাইয়ার বন্ধু নূর মোহাম্মদ সোহান বলেন, “আজ সুমাইয়া হত্যাকাণ্ডের ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও আমরা ফরেনসিক রিপোর্ট পাইনি। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও মূল ঘটনা কীভাবে ঘটেছে সে বিষয়ে আমরা এখনো কিছুই জানতে পারিনি। এই বিলম্ব সহপাঠীদের মানসিকভাবে আরও ভেঙে দিচ্ছে। তাই আমরা আজ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচির মাধ্যমে দাঁড়িয়েছি এবং আমাদের একটাই দাবি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হোক, প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ্যে আনা হোক এবং অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।”

একই ব্যাচের নূরানী শেখ বলেন, এখনো আমরা সঠিক কারণ জানতে পারেনি। তারা বলেছিলো ১৪ দিনের মধ্যে আমাদেরকে সব জানাবে। কিন্তু আমরা এখনো এই হত্যার সঠিক কারণ জানতে পারিনি। আমরা এটা নিয়ে অনেকটা হতাশায় আছি। সে আমাদের সাথে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। আমরা তদন্তে আশার আলো দেখছি না। এই হত্যাকাণ্ডে যারা যুক্ত তারা যাতে প্রাপ্য শাস্তি পায় আমরা আজকে সেই দাবি জানায়৷

শামীউন ঐশী বলেন, আমরা প্রথমে জানি ধর্ষণ চেষ্টা করতে গিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে পরবর্তীতে আবার জানতে পারি তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা। এই হত্যার পিছনে আর কোনো মদদদাতা আছে কিনা প্রশাসনের উচিত তা খতিয়ে দেখা। এটা একটা বর্বর হত্যাকাণ্ড। এটার বিচার দ্রুত না হয়ে পুলিশ টালবাহানা করছে। আমরা ভাই এখানে যারা আছে তাদের সুষ্ঠু বিচার হোক। মোমবাতির আগুন আমাদের প্রতিবাদের ভাষা।

লোক প্রশাসন ১৪ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো: মামুন বলেন, আমরা বার বার আন্দোলন করার পরেও প্রশাসন থেকে কোন যুগোপযোগী কার্যক্রম দেখছি না। সুমাইয়াকে হারিয়েছি অনেক দিন হয়েছে কিন্তু এখনো ধর্ষকের কোনো শাস্তির বিধান হচ্ছে না। যেখানে একজন ধর্ষক আদালতে দাঁড়িয়ে বলছে সে ধর্ষক তাহলে সে কিভাবে বিচারের বাইরে থাকে। যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদেরকে যাতে জনসম্মুখে ফাঁসি দেওয়া হয় আমরা সেটাই চাই। যাতে সুমাইয়ার মতো আর কারো প্রাণ না ঝরে।

সুমাইয়ার ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার মা আর বোনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে হত্যাকারীর মৃত্যুদন্ড যাতে নিশ্চিত করা হয়। ১৫ দিনেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও কেন আলামত জনসম্মুখে আনা হলো না, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হলো না সেটা আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনকে বলতে চাই। আসামীর যাতে মৃত্যু নিশ্চিত করা যায় সে যেন কোন ফাঁকফোকর দিয়ে বের না হতে পারে সেই প্রত্যাশা করি। ২০২৩ সালে এই আসামী একই অপরাধ করেছে। বাদী মামলা মীমাংসা করেনি। ওই মামলায় সে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। তাহলে সে কিভাবে আইনের আওতায় না এসে বিচারবহির্ভূত থাকে? সে হত্যা করার পর পুনরায় বাসায় কেন গেছে, সে কার কার সাথে যোগাযোগ করছে, কোথায় গেছে, কেউ জড়িত ছিল কিনা সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। আমার ভাই আইনজীবী আমরা দেখছি কিভাবে ভালোভাবে এটা হ্যান্ডেল করা যায়। সর্বোচ্চ শাস্তি যাতে নিশ্চিত করা হয় আমরা সেই চেষ্টা করবো। বার কাউন্সিলের কেউ যাতে এই আসামীর পক্ষ না নেয় আমি তাদের সেই অনুরোধ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *