[ রিপোর্টে:- নিজস্ব প্রতিবেদক]
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ২৪ কোটি টাকার কেনাকাটায় ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজের নেতৃত্বে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চিকিৎসক ও স্টাফরা।
গত রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) কুমেক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন ড্যাব কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি ডা. এম এম হাসান, সাধারণ সম্পাদক ডা. আরিফ হায়দার, হাসপাতাল শাখার সভাপতি ডা. মিনহাজুল ইসলাম তারেক, সেক্রেটারি ডা. শফিকুর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক ও স্টাফরা। এ সময় অভিযোগের প্রমাণসহ দুর্নীতির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার দাবি জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদনপত্রও জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এমএসআর ওষুধসহ বিভিন্ন মালামাল ক্রয়ের জন্য ১৩টি টেন্ডারের মাধ্যমে ২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার মালামাল কেনা হয়। এসব টেন্ডারে বাজারদরের তুলনায় ৮-১০ গুণ বেশি দামে ওষুধ কেনা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিপুল পরিমাণ ওষুধ কেনা হয়েছে, যা আগামী ১৫-২০ বছরেও শেষ হওয়ার নয়।

উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ইনজেকশন পেনটোথাল সোডিয়াম (১ গ্রাম, ৪০০০ ভায়েল) কেনা হয়েছে ৫১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায়, যেখানে এর প্রকৃত বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা। একইভাবে এরোভাসটাটিন ২০ এমজি ট্যাবলেট কেনা হয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকায়—প্রায় ৯০ লাখ ট্যাবলেট, যা একেবারেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত।
অভিযোগে বলা হয়, এই টেন্ডার কারসাজিতে সরাসরি জড়িত হাসপাতালের পরিচালক ও টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি ডা. মাসুদ পারভেজ, সহকারী পরিচালক ও সদস্য সচিব ডা. নিসাত সুলতানা।একই ব্যক্তি টেন্ডার ওপেনিং ও মূল্যায়ন কমিটিতে থাকার বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। অভিযোগ রয়েছে এই ঘটনায় জড়িত কুমিল্লা ড্যাবের সভাপতি এম এম হাসানের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড্যাব সভাপতি এমএম হাসান জানান, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রাজনৈতিক পদ পদবি নিয়ে বিবাদের কারণে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। আমি এসবের সাথে জড়িত নই।
প্রতিবাদ সভায় ড্যাব নেতারা বলেন, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। চিকিৎসা সেবার নামে কেউ ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজ ও সহকারী পরিচালক ডা. নিসাত সুলতানাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।