[ রিপোর্টে :- আকাশ আল মামুন, কুবি:]
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদে আয়োজনে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে “জাগো বাহে, কোনঠে সবাই, তিস্তা বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও” স্লোগানকে সামনে রেখে এই মিছিল করেন তাঁরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘জাগো বাহে, কোনঠে সবাই’, ‘তিস্তা বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ ‘ভাসানীর তিস্তা, বুঝে নিবো হিস্যা’, ‘তোমার আমার তিস্তা, বুঝে নিবো হিস্যা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এতে উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’র শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

এসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মাহাবুর রহমান বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে তিস্তা অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষের নিত্যদিনের দুঃখের একমাত্র কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তিস্তা নদী। এই নদী শুষ্ক মৌসুমে থাকে একেবারে পানিশূন্য, আবার বর্ষায় হয়ে ওঠে ভয়ংকররূপী। একই নদীর এই দুই রূপের একমাত্র কারণ ভারতের অসম পানি বণ্টন।
তিস্তা নদীর পানি যদি সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা যায়, তাহলে তিস্তা হয়ে উঠবে উত্তরবঙ্গের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
আমাদের দাবি, ‘তিস্তা উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করে তিস্তার পানির সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা হোক।’
এসময়ে উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’র সভাপতি নাঈম আহমেদ বলেন, ‘কেউ উত্তরবঙ্গের কথা বা তিস্তা পারের মানুষের কথা ভাবে না। নাহলে এভাবে বছরের পর বছর বন্যা কবলিত হয়ে মানুষ ভিটেমাটি হারাচ্ছে, ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তারপরও উপর মহলের কারও টনক নড়ে না কেনো?
আমাদের সমস্যা নিয়ে কেউ কথা বলবে না কারণ মাথা ব্যথা আমাদের অন্য কেউ বুঝবে না। তবে আমার বিশ্বাস আমরা কথা বললে অবশ্যই অন্যরাও বলবে। তাই সকলের উচিৎ এই বিষয়ে সোচ্চার হওয়া। অনলাইন হোক আর অফলাইনে হোক, এটা নিয়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হোক। প্রতিবাদ হোক।
আমরা উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদ,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের প্রতিবাদ চলমান রাখবো। আশা করি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে আমরা পাশে পাবো।’
এসময়ে উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. সাদেকুজ্জামান তনু বলেন, ‘আপনারা জানেন উত্তরবঙ্গের এই তিস্তা নদী একসময় অনেক প্রশস্ত ও খরস্রোতা ছিল কিন্তু বর্তমানে তা খুবই সরু একটি নদীতে পরিণত হয়েছে। যার কারনে বছর বর্ষা মৌসুম অধিক পানিতে বন্যা হয় এবং শুষ্ক মৌসুমে আমরা আমাদের ন্যায্য পানি পাই না। কিন্তু দুঃখের বিষয় উত্তরবঙ্গের অবহেলিত মানুষ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্দোলন, বিক্ষোভ করে, সরকার আশ্বাস দেয় কিন্তু আমরা তার বাস্তবায়ন কখনো দেখতে পারিনি। বৃহত্তর রংপুর জেলারএই নদীটি মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনের উন্নতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। আমাদের বর্তমান ইন্টেরিম সরকার সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করছেন, তাই আমরা বর্তমান সরকারের কাছে আবেদন জানাই, আমাদের এই ন্যায্য হিস্যাটুকু আমাদেরকে অতি শীঘ্রই যেন বুঝিয়ে দেয়া হোক।’