[নিউজ ডেস্ক]

খাগড়াছড়িতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’-এর ব্যানারে ডাকা সড়ক অবরোধ আজ মঙ্গলবারও অব্যাহত রয়েছে। জেলার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও ঢাকা-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ শিথিল করা হলেও দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়নি। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও অল্পসংখ্যক অটোরিকশা-ইজিবাইক চলাচল করছে। প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারাও বহাল রয়েছে জেলার সদর ও গুইমারা উপজেলায়।

পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতা এ অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালেই গত রোববার বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০ জন।

আজ সকালে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের শাপলা চত্বর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সড়কে মানুষের হাঁটাচলাও তেমন নেই। একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গেই দেখলেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শহরে কেবল কয়েকটি টমটম চলাচল করতে দেখা গেছে।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল রয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর সদর উপজেলা, পৌরসভা এলাকা এবং গুইমারা উপজেলায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখার উদ্দিন খন্দকার বলেন, অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।

এদিকে রোববার গুইমারা উপজেলায় গুলিতে নিহত তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের দেবলছড়ি চেয়ারম্যানপাড়ার আথুই মারমা (২১), হাফছড়ি ইউনিয়ন সাং চেং গুলিপাড়ার আথ্রাউ মারমা (২২) ও রামেসু বাজার বটতলা এলাকার তৈইচিং মারমা (২০)।

খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদ বলেন, গুইমারাতে আহত ১৪ জনকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৩ জন হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ও ১ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত নয়টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে ওই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *