[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইমিউনিটি বাড়াতে কার্যকরী আমলকি-সাজনা পাতা।

: করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় নাজেহাল অবস্থা গোটাদেশের। দিন যত যাচ্ছে ততই গ্রীষ্মের উত্তাপের মতোই চড়ছে সংক্রমণের পারদ। বাজারে ভ্যাকসিন চলে আসলেও মিলছে এই সংকটজনক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি। বরং দিন যত যাচ্ছে ততই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে সংক্রমণের গ্রাফচিত্র।

আর এই অবস্থায় সংক্রমণের হাত বাঁচতে নিজেকে যেমন ঘরে বাইরে সুরক্ষিত এবং সচেতন থাকতে হবে তেমনই এই কঠিন সময়ে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকেও থাকতে হবে সুস্থ। না হলে হিতে বিপরীত হতে কতক্ষণ? কারণ, প্রতিনিয়ত দেশে যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। এই অবস্থায় ঘরে বাইরে কোথাও শান্তি নেই। ক্রমশ যেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি আমরা। কিন্তু একদিন ঠিক এই অন্ধকার কেটে যাবে। আবার পৃথিবী হাসবে।

কিন্তু ততদিন পর্যন্ত আমাদের সুস্থ সবল হয়ে বেঁচে থাকাটা জরুরি। আর এই মুহুর্তে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন তা হল শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার। একমাত্র এই ইমিউনিটি পাওয়ার ও অ্যান্টিবডি মারণ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করতে সক্ষম। তাই তো এই কঠিন সময়ে শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আর আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়িয়ে তুলতে আমলকী ও সজনে পাতার অবদান অনস্বীকার্য।

ছোটোখাটো চেহারার সবুজ টক ফল হিসেবে আমলকির গুণ সর্বজনবিদিত। এটা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। তেমনই আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সজনে গাছের পাতার গুণও অনেক। শুধু ডাঁটা নয়, এর পাতা ফুল সবই আমাদের শরীরের জন্য দারুণ উপকারী।

তাহলে আসুন এবার জেনে নিই আমলকী আর সজনে পাতা ব্যবহার করে কীভাবে শরীরের ইমিউনিটি বাড়াবেন।

শরীরে ভিটামিন সি-র ঘাটতি মিটিয়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমলকীর জুড়ি নেই। সেই সঙ্গে পেটের সমস্যা, রক্তল্পতা, ব্লাড প্রেসার প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সজনে পাতার অবদান অনস্বীকার্য। করোনাকালে প্রতিদিন যদি সজনে পাতা ও আমলকীর সংমিশ্রণে তৈরি জুস বা ক্বাথ তৈরি করে পান করা যায় তাহলে সহজেই নিরাময় হবে নানা রোগ। বাড়বে ইমিউনিটি পাওয়ারও।

এরজন্য যেটা করতে হবে তা হল, আধ গ্লাস পানীয় জলে কয়েকটা পরিস্কার সজনে পাতা এবং একটি আমলকী মিশিয়ে সেটা মিক্সিতে ব্লেন্ড করুন। এরপর ওই মিশ্রণটি সংরক্ষণ করে রাখুন এবং প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে পান করুন। দেখবেন উপকার মিলবে হাতেনাতে।

এছাড়াও শরীরে রক্তের পরিমান কমে গেলে জল দিয়ে সজনে ডাঁটা সেদ্ধ করে তার ক্বাথ এবং ডাঁটা চিবিয়ে খেলে রক্তল্পতা দূর হয়। তবে বেশ কিছুদিন নিয়মিত খাওয়া দরকার এটি। সজনে পাতা বেটে রসুন, হরিদ্রা, লবন ও গোলমরিচ সহ খেলে আঘাতপ্রাপ্ত জায়গার ফোলা ভাব কমে যায় ও জ্বরে আরাম হয়।

অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, জ্বরের সমস্যার পথ্য হিসেবেও আমলকি সমান কার্যকর। টিবি রোগের হাত থেকেও সুরাহা দেয় আমলকি।

আমলকিতে থাকা ক্রোমিয়াম শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনে সাহায্য করে, সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।

আমলকি বয়স্কদের জন্যও খুব উপকারী। এতে ক্যারোটিন থাকায় দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ছানি পড়া, চোখে চুলকানি বা জল পড়ার সমস্যা থেকেও রেহাই দেয়। এর রস স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন ঘটিয়ে চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে। আমলকী কাঁচা বা সিদ্ধ দুই অবস্থাতেই উপকারী।

এছাড়াও আমলকি শরীরের যেমন ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করে তেমনই , খোস প্যাঁচড়া ত্বকের নানারকম রোগ ও চুলের সমস্যা সমাধান করতে এর ভূমিকা অনবদ্য। আর এই মহামারীর মতো কঠিন সময়ে রোজকার ডায়েট চার্টে থাকুক আমলকী,সজনে পাতার মতো উপকারী উপাদানগুলি। শরীর ঠিক রাখতে এখন এরাই দেবে আপনার সাথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *