[ ম্যাক নিউজ ডেস্ক ]

করোনা মহামারির কারণে ঈদযাত্রায় বিধিনিষেধ থাকার পরও শিমুলিয়া ঘাট থেকে ফেরিতে গাদাগাদি করে বাংলাবাজার আসার সময় পদদলিত হয়ে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। বুধবার (১২ মে) দুপুরে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মা নিপা আক্তারকে (৪৫) হারিয়েছে কিশোর রিফাত হোসেন (১৪)। সে জানায়, তার মা ফেরিতে থাকার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঘাটে ফেরি ভিড়তেই লোকজন হুড়োহুড়ি করে নামতে শুরু করে। ব্যাগ হাতে নিয়ে সবার সঙ্গে সেও নেমে পড়ে। কিন্তু পন্টুনে গিয়ে দেখতে পায় তার মা নেই। লোকজন নেমে গেলে ফেরির ডেকে মৃত অবস্থায় তার মাকে পড়ে থাকতে দেখে সে।

রিফাতদের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বালিতগ্রাম এলাকায়। ঈদে মাকে নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরছিল সে। যাত্রাপথে এনায়েতপুরী নামের ফেরিতে পদদলিত হয়ে মারা গেছেন তার মা নিপা আক্তার।

ঘাট সূত্রে জানা যায়, প্রখর রোদের মধ্যে ফেরি এনায়েতপুরী যখন বাংলাবাজার ঘাটের কাছাকাছি আসে তখনই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করেন যাত্রীরা। পানির পিপাসা আর গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকেন তারা। ফেরিটি বাংলাবাজার ঘাটে ভিড়লে অসুস্থ যাত্রীদের মধ্যে চারজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। অসুস্থ অর্ধশতাধিক যাত্রীকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বেলা ১১টার দিকে শিমুলিয়া থেকে রোরো ফেরি এনায়েতপুরীতে ওঠেন কমপক্ষে তিন হাজার যাত্রী। ফেরিটি মাঝ পদ্মায় যাওয়ার পরে তীব্র গরমে ফেরির ডেকে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফেরিটি শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে ভিড়লে দেখা যায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে।

কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, দুপুরে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ফেরি এনায়েতপুরীতে মাঝ পদ্মায় থাকা অবস্থায় গরমে ও ভিড়ের চাপে অতিষ্ট যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এ সময় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছাতেই তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে পদদলিত হয়ে চারজন যাত্রী নিহত ও অর্ধশতাধিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এর আগে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা শাহপরাণ ফেরির পন্টুনে আনছার মাদবর (১২) নামে এক শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়।

শিবচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, তারা প্রচণ্ড ভিড় আর তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছে অর্ধশতাধিক যাত্রী। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *