[ম্যাক নিউজ ডেস্ক]

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির ২৭ দফা আসলে জনগণের সাথে ভাঁওতাবাজি এবং রাষ্ট্রের নয়, বিএনপিরই মেরামত দরকার।’ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির মেরামত দরকার কারণ তারা গত ১৪ বছর ধরে যেভাবে জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে, জনগণকে জিম্মি করার রাজনীতি করেছে, রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা করেছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, এ ধরনের রাজনৈতিক দল যখন রাষ্ট্র সম্পর্কে মেরামতের কথা বলে তখন মানুষ স্বাভাবিকভাবে আতংকিত হয়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির ২৭ দফার অনেক কিছু তারা যে নীতি নিয়ে চলছে, সেটির সাথে সাংঘর্ষিক। একদিকে যেমন তারা যে সব মৌলবাদী দলগুলোর সাথে জোট করেছে, তাদের কারো কারো মূল মতাদর্শ হচ্ছে বাংলাদেশকে ধর্মরাষ্ট্র আফগানিস্তানের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, আবার অন্য দিকে বিএনপি দফা দিয়েছে ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ অর্থাৎ তাদের কথা ও কাজে এটা প্রচন্ড সাংঘর্ষিক।’

‘বিএনপির এই ২৭ দফা আসলে জনগণের সাথে ভাঁওতাবাজি’ উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের ২৭ দফার ১৩ দফায় বলা আছে, দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপোষ করা হবে না। দুর্মুখেরা বলছে, এটি দিয়ে বিএনপি আসলে বোঝাতে চেয়েছে– দুর্নীতি তারা আগের মতোই অব্যাহত রাখবেন। কারণ যারা দেশকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে, যারা হাওয়া ভবন তৈরি করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল, তারা যখন দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপোষ হবে না বলে তখন তারা আগের সেই দুর্নীতির পথেই হাঁটবে সেটিই বোঝায়।’

ড. হাছান বলেন, ‘রাষ্ট্র মেরামত কেন বলা হলো! এভাবে দফাগুলোর নাম দেওয়া ঠিক নয়। এটি কি কারখানা যে মেরামত করতে হবে! আসলে বিএনপিরই মেরামত দরকার। আর যাদের মস্তিষ্ক থেকে এগুলো আসছে, তাদের মস্তিষ্করও মেরামত দরকার।’

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কারাগার থেকে কয়েক ঘন্টার জন্য প্যারোলে বেরিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতা আলী আজম ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে চেক করেছি, গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো জেল প্রশাসনের কাজ। সেটি আবার পুলিশের অধিনে নয়, আইজি প্রিজনের অধিনে। যেহেতু কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে, এ জন্য তারা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে। এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা সেই বিএনপি নেতাকে বহন করে এনেছিল শুধু তারাই জানতেন। তবে আমি মনে করি, জানাজার সময় তার ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে আবারও বিএনপির অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন -এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। আমরাও চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। একটি প্রতিযোগিতামূলক সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, সেটি আমরা চাই। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার।’

‘তবে কথায় আছে না- গাধা জল ঘোলা করে খায়’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যেমন ১০ তারিখে নয়াপল্টনের অফিসের সামনে থেকে নড়বেন না বলে পরে গরুর হাটের ময়দানে গিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে নির্বাচনে আসবে।’

#

‘আওয়ামী লীগ একটি স্মার্ট দল’ : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর ২০২২:
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময়ই একটি স্মার্ট দল। আওয়ামী লীগই সবসময় প্রথমে ভাবে জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে কি করতে হবে। আওয়ামী লীগের হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশও আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হবে।’

বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিল ২০২২ এর অনুষ্ঠানস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শনে গিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন।

উদাহরণ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান বলেন, ‘সেই পাকিস্তান আমলে বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার আন্দোলন আওয়ামী লীগের ঘর থেকেই শুরু হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ থেকেই জাতিকে অবহিত করা হয়েছে। জাতিকে প্রস্তুত করা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে কয়েক দশক করে পিছিয়ে পড়লেও এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা পিছিয়ে নেই। অনেকের আগে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা ভেবেছে, যেটি ভারত ২০১৫ সালে, যুক্তরাজ্য ২০০৯ সালে ভেবেছে।’

মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনটি শুধু দলেরই নয়, জাতীয় জীবনেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সম্মেলন সংগীত ছিল ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ এবং সেই সংগীতই পরে আমাদের জাতীয় সংগীত হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবার আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে দেশ গঠনে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, জাতির পিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছাবার লক্ষ্যে বার্তা থাকে। এবারেও দেশকে এগিয়ে নেওয়া, দেশের রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করা ও রাজনীতিতে যে অপশক্তির অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে যে লালন-পালন করা হচ্ছে, সেই সব বিষয়েও সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে।

তবে এবারের সম্মেলন অন্যবারের তুলমায় কম জাঁকজমকপূর্ণ হবে এরপরও আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে এবারের সম্মেলনে অনেক কিছু থাকবে, জানান তিনি।

উদ্যান পরিদর্শনকালে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাবেক এমপি মো: নবী নেওয়াজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আক্তার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *