ম্যাক নিউজ
রিপোর্ট:জহিরুল হক বাবু ।
শত বছরের সরকারী রাস্তা দখল করে ইউপি সচিবের নির্মাণ করা ৩ তলা ভবন অবশেষে উচ্ছেদ করেছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ২ নং উত্তর দুর্গাপুর ইউনিয়নের গুণানন্দি গ্রামে ২৮ ফুট চওড়া ওই সরকারী রাস্তা উদ্ধারের জন্য মঙ্গলবার সকাল থেকে ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরু করা হয়। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জনি রায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় শত শত এলাকাবাসী প্রশাসনের এ অভিযানকে সাধুবাদ জানান।
জানা গেছে, জনসাধারণের চলাচলের জন্য গুণানন্দি গ্রামের শত বছরে পুরোনো সরকারী রাস্তা বন্ধ করে ৩ তলা ভবন নিমার্ণ করেন ওই গ্রামের বাসিন্দা, জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের ফলে গ্রামবাসীর যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এলাকাবাসীকে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। বিএস, সিএস, আরএস খতিয়ানে এটি সরকারী রাস্তা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। শুধু প্রভাব খাটিয়ে ওই ইউপি সচিব সরকারী রাস্তার উপর ভবন নির্মাণ করেন। এ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ১০/১২টি শালিস বৈঠক করেও কোন ফল হয়নি। পরবর্তীতে বিষয়টি মামলায় গড়ালে আদালত সরকারী রাস্তা উদ্ধারের নির্দেশ দেন। এর ফলে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
পুলিশের একটি বিশাল দল আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা উপস্থিতে পুলিশ সদস্যদের সহযোগীতায় প্রথমে বাড়ীটির গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন করা হয়। পরে বুলডোজার দিয়ে দিয়ে বাড়ীটি ভাঙ্গার কাজ আরাম্ভ করা হয়। অভিযান পরিচালনার সময় ওই বাড়ির নারী সদস্যরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার মত ঘটনা ঘটায় এবং অশালীন আচরণ করেন। বাড়ির মালিক ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা বুলডোজারের সামনে এসে কাজে বাঁধা প্রদান করলে সাময়িক ভাবে কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে আবারো ভাঙ্গার কার্যক্রম শুরু হয়।
এ ব্যাপরে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মো. ইসমাইল হোসেন ইউপি সচিব হলেও তিনি নিজেকে সচিব হিসেবে পরিচয় দেন। নিজেকে তিনি সরকারের সচিব পরিচয় দিয়ে নানা সময় নানা সুবিধাও আদায় করেন বলে তার বিরুদ্ধে যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বহুবার শালিস বৈঠক করেও তার সাথে সুরাহায় আসা যায়নি। স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিদের্শও তিনি অমান্য করেছেন। অবশেষে এ রাস্তাটি উদ্ধার হওয়ায় আজ এ এলাকাজুড়ে বলতে গেলে ঈদের আনন্দ বইছে।
এ ব্যাপারে ইউপি সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আমার পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত জায়গায় বড়ি করেছি। আজ সরকারী নিদের্শে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি একজন ইউপি সচিব, মিডিয়ায় বক্তব্য দিতে পরি না।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনি রায় জানান, বাড়িটি সরকারী রাস্তা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে। একাধিক নোটিশ প্রদান করা হলেও বাড়ির মালিক কর্নপাত করেনি। তাই আজ প্রশাসনের উদ্যোগে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।