[ম্যাক নিউজ রিপোর্টঃ-অমিত মজুমদার, কুমিল্লা]

কুমিল্লায় করোনা রোগী ভর্তি না করায় রোগীর স্বজনদের হামলার শিকার হয়েছেন চিকিৎসক তানভীর আকবর । রোববার রাত ৯ টায় কুমিল্লা নগরীর নোয়াপাড়া এএফসি ফরটিস হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে । এসময় হাসপাতাল ভাংচুর ও হসপিটালে দায়িত্বরত কয়েকজনের উপর হামলা চালালো হয় ।

সোমবার রাত ২ টায় হামলার শিকার ডাক্তার তানভীর আকবর নিজে বাদি হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয় । মামলা দায়ের পর অভিযান পরিচালনা করে ২নং আসামী মো: অনন্ত (২৫) কে আটক করে পুলিশ । বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত ) কমল কৃষ্ণ ধর ।

মামলার সূত্র জানা যায়, করোনা আক্রান্ত রোগী হোসাইনের অক্সিজেন স্যাটুরেশন মাত্র ৬০% (প্রায়)। অবস্থা খারাপ হওয়া কুমিল্লা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ঢাকা তে আইসিইউ স্থানান্তরের নির্দেশনা দেওয়া হয় । কিন্তু রোগীর স্বজন কোথাও আইসিইউ না পেয়ে রোববার রাত সাড়ে ৮ টায় ফরটিস হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে । হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি নিতে রাজি হয়নি । রোগীর স্বজন জোরপূর্বক চাপ প্রয়োগ করে । বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ৫-৬ জন মিলে ডাক্তার তানভীর আকবরকে প্রথমে কিল ঘুষি দিতে থাকে । পরবর্তীতে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় ।

ডা. তানভীর আকবর জানান, জরুরী বিভাগে রোগীটি আসার পর চেকআপ করি । তার অবস্থায় খারাপ হওয়ায় রোগীর স্বজনদের উন্নত চিকিৎসার জন্য হাই ফ্লু ন্যাসাল ক্যানুলা ও আইসিইউ সমৃদ্ধ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় । কিন্তু তারা হসপিটালে ভর্তির জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করে । এক পর্যায়ে আমার উপর এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এসময় আমাকে বাঁচাতে আসলে হাসপাতালের কয়েকজনকেও মারধর করে । এছাড়া হাসপাতালের সম্পদের ক্ষতি সাধন করে ও অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে সটকে পড়ে। রাতেই মামলা দায়ের করেছি । দ্রুত সময়ের মধ্যে একজনকে আটক করায় সদরের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার মহোদয় , জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিএমএর নেতৃবৃন্দদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আশা করি পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নিবে ।

বিএমএ-র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোঃ আতাউর রহমান জসীম বলেন, করোনার অতি মহামারিতে কর্তব্যরত চিকিৎসকের উপর হামলার তীব্র নিন্দা এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবী জানাই। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি ব্যবস্থা না করলে কঠোর আন্দোলনে ঘোষণা করা হয়ে । দেশের এই পরিস্থিতি আমাদের চিকিৎসকরা এমনিতেই মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। তার উপর এমন হামলা কোন ভাবেই মনে নেয়া যায় না। কুমিল্লার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ক্ষুব্ধ হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হতে পারে।

কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক ( তদন্ত ) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, মামলা দায়ের পর রাতেই অভিযান পরিচালনা করে হামলার সাথে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে কয়েকটি টিম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে । আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হব ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *